তিন ঘন্টা বেঁচে থাকার পর উভয়লিঙ্গ শিশুটি মারা গেছে। গোমস্তাপুর উপজেলার বালুগ্রাম দক্ষিণটোলা গ্রামের ভ্যানচালক নাসির হোসেনের স্ত্রী জিন্নাতুন খাতুন শুক্রবার রাত ১০ দিকে গোমস্তাপুর মহানন্দা ক্লিনিক এ- ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজার করে এ শিশুর জন্ম দেয়। সিজারে পর চিকিৎসক ও নার্সরা শিশুটিকে দেখে হতবাক হয়ে যায়। তাঁরা দেখেন, শিশুটি ছেলে ও মেয়ে উভয় লিঙ্গের। মাথা অর্ধেক নেই, মগজও রয়েছে পৃথকভাবে একটি থলেতে।
মহানন্দা ক্লিনিক এ- ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রী নন্দন কুমার কর্মকার জানান, ওই প্রসূতির প্রসব বেদনা উঠলে পরিবার লোকজন শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তাঁদের সেন্টারে নিয়ে আসে। রাত ১০টায় ওই প্রসূতির সিজারিয়াং অপারেশনটি করেন ডা.হাসেম আলী নামে একজন চিকিৎসক।
অপারেশন পর অপারেশন রুমে চিকিৎসক ও নার্সরা দেখেন নাসির হোসেন ও জিন্নাতুন খাতুন দম্পতির শিশুটি অদ্ভুত আকৃতি ও উভয়লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নিয়েছে। জন্মের পর মা ও শিশু দুইজনেই সুস্থ ছিল। রাত ১টার পর অদ্ভুত ওই শিশুটি মারা যায়।
প্রসূতি জিন্নাতুন খাতুনের বোনের স্বামী আলামিন বলেন, আমার শালীর দ্বিতীয় শিশু এটি। এর আগে একটি ছেলে রয়েছে তার। আলট্রসোনোগ্রামেই শিশুটির অদ্ভুত আকৃতির বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছিলাম। শিশুটির মাথা নেই বললেই চলে। কপাল থেকেই শেষ হয়েছে। মগজ আলাদাভাবে একটি থলেতে আছে।
শিশুটি জন্মের পর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আয়া মোসা. ইদন বেগম বলেন, জন্মের পর বাচ্চাটিকে তাঁর হাতে তুলে দেয়া হয়। বাইরে এসে নাভি কেটেছি। তাঁর ওজনসহ বাকি সবকিছু স্বাভাবিক আছে। মুখে হাসিও দেখেছি। কিন্তু মাথা অর্ধেক নেই এবং পুরুষ ও নারীর উভয় লিঙ্গই রয়েছে। নাভি কাটার পর তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। উভয় লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেয়ার ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারেই অদ্ভুত! তবে মাথার খুলির পরিপক্বতা না পেলে মগজ আলাদা হয়ে থাকতে পারে।
এদিকে পরিবারের লোকজন মৃত ওই শিশুটিকে শনিবার সকাল ১১টায় বালুগ্রাম গোরস্থানে দাফন করেছে বলে গোমস্তাপুর ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য সাইদুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।