আবু বক্কার সিদ্দিকী পেশায় একজন কৃষক হলে ও সাহিত্যের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। এই বৃদ্ধ বয়সে অবসর টুকু তিনি কাজে লাগাতার নতুন বই লেখার পিছনে। অবসর সময় টুকু এভাবে কাটাতে চান।
আবু বক্কর পেশায় একজন কৃষকই নন তিনি, একজন কবি ও বটে। এ পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ২২ টি কবিতার বই লিখেছেন, উপন্যাস লিখেছেন ৪ টি যা বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বই গুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ৫০০ কবিতা।
এই লেখকের পুরো নাম আবু বক্বার সিদ্দিকী। ঝিনাইদহ কোটচাদপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দা। শৈশব কাল থেকেই একজন কবি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছেন। গরিব কৃষকের সন্তান হওয়ায় পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত লেখা পড়া করতে পেরেছেন। সংসারে অভাব অনটনের কারণে পরে আর স্কুলে যাওযা সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়লেও তিনি আজ একজন গুণী লেখক হিসাবে পরিচিত লাভ করেছেন এলাকায়।
কোটচাঁদপুর উপজেলা এলাঙ্গী ইউনিয়নের একবারেই অজোপাড়া গায়ের ফাজিলপুর গ্রামের দরিদ্র বৃদ্ধ কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিকী। তার বারার নাম মরহুম আপেল উদ্দিন মাড়াহ, তার বয়স ৮১ বছর। লেখাপড়া করেছেন মাত্র পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত। ছোট বেলা থেকে তার নেশা কবিতা ও উপন্যাশ লেখা। তিনি ১৭ বছর বয়স থেকে অসংখ্যা দেশত্ববোধক কবিতা, উপন্যাশ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মূগ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর নামে লিখেছেন ২২ টি কবিতা। এবং উপন্যাশ লিখেছেন ৪টি ও উপন্যাশ বই আকারে প্রকাশ করতে গরীব এই বৃদ্ধ দরিদ্র কৃষক। খরচ করেছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এভাবে প্রতিনিয়ত লেখালেখির কারণে সময় ব্যায় করেছেন ৫১ বছর। উল্লেখযোগ্য কবিতা গুলো হলো-”মুজিবের নৌকায়” ”রাসেলের বিলাপ” ”মেঠোপথ” ”রুপসী কন্যা” ”বঙ্গবন্ধুর রনতরী” ”সাজাও তরী” সহ অসংখ্য কবিতা। আর উপন্যাশ গুলোর মধ্যে ”যাকে তাকে” ”খুজি” ”এসো সব” ”এরা কারা এবং ”বঙ্গবন্ধুর মাটির মায়া”সহ আর ও অনেক বই লিখেছেন। নিজের জমির ফসল বিক্রি করে এসবের পিছনে ব্যায় করে থাকেন।
তিনি বলেন, আমার উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধুর নামে লেখা উপন্যাশ ও কবিতা গুলো একদিন বঙ্গবন্ধুর কন্যা বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি গোচর হবেন। লেখা কবিতা, গ্রন্থ প্রধানমন্ত্রী গ্রহন করবেন আর সেদিন চরন কবি আবু বক্কর সিদ্দিকী কবি হিসাবে স্বীকৃতি পব বলে আশা করি।
আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, আমার লেখা কবিতা ও উপন্যাস গুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা এবং কবি হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও সরকারের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিদের দপ্তরে ঘুরে ঘুরে করেছেন আবেদনের পর আবেদন। খরচ করেছেন হাজার হাজার টাকা, কাজের কাজ কিছুই হয়নি সবাই দিয়েছেন আশার বানি।
আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন বাবার সম্পত্তি বলতে কিছুই ছিল না। যেটুকু ছিল সেটুকু তিনি ছেলের লেখাপড়ার জন্য বিক্রি করে দেন। বাবার মৃত্যুর পর তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দেন এবং জমিতে কাজ করতেন। তার কোনো সম্পত্তি বা সময় কিছুই ছিল না, যা দিয়ে তিনি তার ইচ্ছে পূরণ করতে পারেন। প্রথমে তিনি বিভিন্ন ছবি দেখে শব্দ কাগজে টুকে রাখতেন, তিনি নিজে লেখার চেষ্টা করতেন। কবিতা লিখার চেষ্টা করতে সময় ব্যায় করতেন।
তিনি অনেক সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করছেন, আবার গ্রামের স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের ডেকে ডেকে কবিতা পড়ে শুনাতেন। এভাবে ভাগ্যের কী খেলা ক্রমেই কবিতা, উপন্যাস,গল্প লিখে এলাকায় ব্যাপক আলোচিত হয়েছেন। অনেক প্রতিকুলার মধ্যে তার কবিতা লেখার ক্ষমতা সত্যিই প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। তিনি তাদের জন্য একজন জীবন্ত উদাহরণ, তিনি মনে করেন অর্থ ছাড়া প্রকৃত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব না। বাবা মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধোরতে তিনি পঞ্চম শ্রেণীর পরে আর লেখাপড়া করতে না পেরে কৃষকের কাজ করতে ঝুকে পড়েন। পাশাপশি কবিতা লেখা চালিয়ে যান। তিনি বলেন‘আমার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।