ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে আগাম শিম চাষ করে বদলে যেতে পারে কৃষকদের ভাগ্য। আগাম চাষ করে শিম চাষে ফলন ভালো হবে বলে আশা করেছেন শিম চাষিরা। শিম বিভিন্ন রকমারির শবজির মধ্যে পুষ্টিমান সমৃদ্ধ জনপ্রিয় একটি সবজি। এ শিম চাষে ভাগ্যের পরিবর্তন করে পরিবারে সচ্ছলতা আনতে পারে।
মহামারি করোনার ভয়াবহতার মধ্যেও তাদের কণ্ঠে যেন বইছে আনন্দের সুর। চোখে পড়ার মত এমন দৃশ্যটি এখন কালীগঞ্জ উপজেলার সুবিতপুর গ্রামের মাঠে। ক্ষেতে কাজে এসে প্রচন্ড রোদে পুড়লেও নেই তাদের কোন ক্লান্তি কারণ এবারের অসময়ের সিম চাষে বাম্পার মূল্য পাচ্ছেন কৃষকেরা। কৃষকদের ভাষ্য, এ শিমগাছ বৃষ্টি সহিঞ্চু। বর্তমানে প্রতি কেজি সিম ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বিঘায় খরচ বাদে তারা প্রায় লাখ টাকা লাভবান হবেন বলৈ আশা করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার সুবিতপুর গ্রামের মাঠে অনেক কৃষকই তাদের ক্ষেতে অসময়ের রুপভান শিমের চাষ করেছেন। এ গ্রামের সবজি চাষি বাপ্পারাজ জানান, শিম সাধারনত শীতকালীন সবজি। কিন্তু ভিন্ন জাতের এ শিম এখন বারোমাস চাষ করা সম্ভব। কৃষক রফি উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, হাসেম আলী, ইমরান হোসেন, হারুন অর রশিদ, রহমত, পান্নু রহমান,আব্দুল সাত্তার সহ অনেক কৃষক প্রায় শতাধিক বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন এ জাতের শিম চাষ করছেন। কৃষকরা বলছেন শিম ক্ষেত আবাদে খুব বেশির জমির প্রয়োজন হয় না। আলাদা জমি ব্যবহার না করেও অন্য ফসলের মাঝে এ শিম আবাদ করা যায়। এ ছাড়া ফসলি জমিতেও শিম বীজ রোপন করে তা ফলন করা যায়। দোআঁশ মাটি উর্বরা শক্তির বৃদ্ধিতে শিমের ফলন ভাল হয়। শিমের বীজ শুকিয়ে রাখে কৃষকদের পরিবারে। আষাঢ ও শ্রাবন মাসে ছড়া দামে এ শিম বিক্রি হয়।
কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, অসময়ের আবাদ করা এ শিম নতুন সবজি হিসাবে বাজারে বেশ চাহিদা। দামও অনেক বেশি থাকে। ক্ষেতেও ভালো ফলন হচ্ছে। রুপভান জাতের এই শিম চাষ করতে প্রতি বিঘা জমিতে বীজ, সার, কীটনাশক ও মাঁচার টাল দেওয়া বাবদ প্রায় ১৮/২০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। আষাঢ় মাসের প্রথম দিকে এ শিমের বীজ বপন করতে হয়। পরবর্তীতে চারা গজানোর ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় গাছে ফুল আসে। প্রায় দেড় মাস পর থেকেই শিম তোলা শুরু হয়। তিন থেকে ৪ দিন পরপর শিম তুলে বাজারে বিক্রি করা হয়। একটানা ৬ মাস ক্ষেত থেকে শিম তোলা যায়।শিম চাষের জন্য এখন উপযুক্ত সময় নয়। কালীগঞ্জের কৃষকরা আগাম সীম চাষ করে শতভাগ সফলতা পেয়েছেন। বাজার দর ভালো থাকায় চাষীরা আগাম সীম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অনুকূল পরিবেশ থাকায় জেলার বিভিন্ন মাঠে মাটি থেকে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু বাঁশের মাচা তৈরী করে আবাদ করা হয়েছে উচ্চ ফলনশীল রুপভান জাতের শীম।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মোহায়মেন আক্তার জানান, এ বছর উপজেলার বেশ কিছু এলাকার কৃষকরা জমিতে শিমের আগাম চাষ করেছেন। অসময়ের শিম চাষ হলে কৃষকরা দামও ভালো পেয়ে থাকে।