গাজীপুরের কালীগঞ্জে দুই স্ত্রীর ঝগড়ায় রাতে দ্বিতীয় স্ত্রী স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তন ও গলা কেটে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামে ঘটেছে।
অভিযোগ ও স্থাণীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের রাথুরা গ্রামের মৃত সফুর উদ্দিনের পুত্র নাজমুল মৃধা (৩০) প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী তার পিতার বাড়ীতে থাকেন। নাজমুল প্রথম স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ঈদের আগের দিন গ্রামের বাড়ীতে আসে। ২৩ জুলাই সকালে দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী বাবার বাড়ী হতে স্বামীর বাড়ীতে এসে সতীন আছমাকে অতকির্তভাবে মারধর করে। দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টায় পরিবারের সবাই রাতের খাবার শেষে নাজমুলের প্রথম স্ত্রী আছমা কণ্যার সাথে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শ্যামলী স্বামী নাজমুলের সাথে ঘুমায়। রাত আনুমানিক ২টায় পরিবারের সদস্যগণ আর্তচিৎকার শুনে ঘর থেকে বাহিরে এসে দেখে আছমা তার স্বামীকে বাড়ীর দিকে নিয়ে আসছে। প্রথম স্ত্রী স্বামীর শরীরের নি¤œাংশ রক্তে ভেজা অজ্ঞান অকস্থায় পড়নের কাপড় সরিয়ে স্বামীর গোপনাঙ্গ ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কর্তন করা দেখতে পায়। জরুরী ভিত্তিতে নাজমুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার গোপনাঙ্গ ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীতে সেলাই করে। সকালে অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এ বিষয়ে নাজমুলের বড় বোন বিলকিস বেগম বাদী হয়ে গত ২৪ জুলাই রাতে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
নাজমুল জানায়, রাতে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে শুয়ে পড়ার পর শ্যামলী দরজা খুলে একাধিক বার বসত ঘরের বাহিরে আসা-যাওয়া করে। আমি তাকে ঘরের বাহিরে যাওয়া আসার কারণ জানতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। রাতে অসহ্য যন্ত্রণায় ঘুম ভেঙ্গে গেলে উঠে দেখতে পাই আমার গোপনাঙ্গ রক্তাক্ত এবং শ্যামলীর বাম হাতে একটি নতুন রক্তাক্ত ব্লেড ও ডান হাতে একটি ধারালো বটি। এ সময় আমি শ্যামলীকে ঝাপটে ধরার চেষ্টা করলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বটি দিয়ে গলায় কোপ মারে। আমি আত্মরক্ষার্থে বাম হাত দিয়ে প্রতিহতের চেষ্টা করলে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। শ্যামলী আমাকে রক্তাক্ত জখম করে জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমিও রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে আটক করতে চেষ্টা করি। কিন্তু শ্যামলী দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, রাতেই এজাহারটি উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ জাকির হোসেন এর নিকট হস্তান্তর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেছি।
উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি এজাহার পেয়েছি। এজাহারটি এফআইআর ভুক্ত করার জন্য ওসি স্যার নির্দেশ প্রদান করেছেন। শ্যামলীকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।