সেনবাগে চাঁদাবাজী ও মাদকের মামলার পলাতক আসামি কথিত সাংবাদিক মাহমুদুর রশিদ রাজুকে (৩০) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রাজু বৃহস্পতিবার নোয়াখালীর ৪নং আমলী আদালতের বিচারক নবণিতা গুহের আদালতের আত্মসমার্পন করে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন নাম মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে। রাজু সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের বীরকোট গ্রামের আবদুল ওয়াদুদের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেনবাগ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ(ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা। এরআগে বিগত ২০২০ সালের ৩জুন একই মামলায় সেনবাগ থানার এসআই সবুজ চন্দ্র পাল শাহাদার হোসেন স্বপন নামের মামলার অপর আসামি কথিত সাংবাদিককে গ্রেফতার করে করে কারাগারে প্রেরণ করে। ওই সময় রাজু পালিয়ে যায়। চাঁদাবাজীর ওই মামলাটি করেছিলেন, সেনবাগের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও ঢাকাস্থ সেনবাগ সেতুবন্ধন সমিতির সভাপতি মো: ইউনুছ পাটোয়ারী বাচ্চু।
জানা গেছে, বিগত ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টার সময় সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউপির কানকিরহাট পূর্ব বাজারের মার্কেটাইল ব্যাংকের সামনে সড়কের ওপর স্থানীয় বীরকোট গ্রামের মাঝি বাড়ীর আবুল কালাম আবু’র পুত্র শাহাদাত হোসেন স্বপন ও একই গ্রামের আবদুল ওয়াদুদের পুত্র মামুনুর রশিদ রাজু নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পিপিই পরে একটি পন্যবাহী ট্রাক আটক করে গাড়ীর চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করার অজুহাতে চাঁদাবাজি করতে থাকে। এ সময় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ঢাকাস্থ সেনবাগ সেতুবন্ধন এর সভাপতি মো: ইউনুছ পাটোয়ারী বাচ্চুকে স্থানীয়রা বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন।
এরপর ১২ এপ্রিল কথিত সাংবাদিক মামুনুর রশিদ রাজু ও স্বপন তাদেরকে হত্যার হুমকি ও মারধরের মিথ্যা অভিযোগ ব্যবসায়ী মো: ইউনুছ পাটোয়ারী বাচ্চুর বিরুদ্ধে সেনবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাচ্চুর বিরুদ্ধে নানা অসম্মানজনক মিথ্যা ও বানোয়াট আপত্তিকর মন্তব্য লিখে প্রচার করেন।
এরপর ২৬ এপ্রিল ব্যবসায়ী মো: ইউনুছ পাটোয়ারী বাচ্চু বাদী হয়ে কথিত দুই সাংবাদিক রাজু ও স্বপনের বিরুদ্ধে সেনবাগ থানায় চাঁধাবাজী ও মাদক ব্যবসার লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তে নামে থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা গুলো। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে কথিত দুই সাংবাদিকের রাজু ও স্বপন নামে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসার তথ্য।
তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নোয়াখালী ,ফেনী ও কুমিল্লায় মাদকের মামলা। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ছাগলনাইয়া থানায় শাহাদাত হোসেন স্বপন মাদক আইনের ১৯(১)এর ৯ (ক) মামলা নং ১৬ ও রাজুর নামে ১৭ সালে ১৪৭/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/১০৯/৩৪ ধারায় মামলা নং ১৬ আসামী।
এছাড়াও ,গত ৩ জানুয়ারি ২০২০ পরীকোটের মাওলানা আবদুল হালিমের বাড়ীতে ৮ হাজার চাঁদাবাজী, বীরকোটের গরু খামারী আলী হোসেন জুয়েল থেকে ২০ হাজার, মতইনের গাড়ী চালক মীর হোসেন, পিকআপ চালক বীরকোটের মিজান, মতইনের চালক সৌরভ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় সহ বীরকোট পূর্বপাড়ার পিকআপ চালক সাইফুলের চলন্ত গাড়ীটি ২০ মার্চ রাত ১১ টায় থামিয়ে কাগজপত্র, লাইসেন্স আছে কিনা চার্জ করে চাঁদাদাবী করেন। একপর্যায়ে স্বপন ও রাজু জোর করে তার পকেট থেকে ৫ হাজার টাকা চিনিয়ে নেয়। তাদের দুইজনের অত্যাচারে ওই জনপদের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। এছাড়ও করোনার শুরুতে কথিত দুই সাংবাদিকের পিপিই পরে মাদক বিক্রি ও চাঁদাবাজির করেছিলো।
কথিত ওই দুই সাংবাদিক নিজেদেরকে ,দেশ যোগাযোগ টেলিভিশন, চ্যানেল টি ওয়ান, ডোনেট বাংলাদেশ, জাতীয় সাংবাদিক ক্লাব, দর্পণটিভি, ভোরের আলো, সিএন বাংলা টেলিভিশন, আইন বিষয়ক নিউজ পোর্টাল অপরাধ ডটকম সহ নানা পরিচয়ে দিয়ে অপরাধ চালিয়ে আসছিল। রাজুর জামিন নাম মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের সংবাদ এলাকায় পৌছলে এলাকায় শস্তি ফিরে আসে।