ভৈরব শহরের দীর্ঘ ২ সপ্তাহ যাবত পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানি না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। রমজানে রোজার সময় সেহরী,ইফতার, ওযু ,গোসল ও রান্না-বান্না করতে না পারায় বিক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা খালি কলসি নিয়ে পানির দাবিতে বুধবার দুপুরে পৌর এলাকায় ঘোড়াকান্দ জব্বার জুটমিল সড়কে স্থানীয়রা বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছে। এ ছাড়া দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে পৌরসভা ঘেরাওয়ের আল্টি মেটাম দিয়েছেন। তবে নব নির্বাচিত মেয়র লাইনে ত্রুটির কারণে পানি সরবরাহে বিঘœ ঘটতে পারে। পানি সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন।
১৯৯৯ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ গ্যালন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ভৈরবে ওয়াটার প্লান্ট ট্রিটমেন্ট বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ স্থাপিত করেন। পরে ২০০৭ সালে তা পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেন। শুরু থেকে পৌরসভা ২ শতাধিক গ্রাহক নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এখন পৌর শহরের ভৈরব-বাজার,ভৈরবপুর,কমলপুর,ঘোড়াকান্দা ও পঞ্চবটি গ্রামের কিছু অংশে ৫ শত ৫৮জন গ্রাহক রয়েছে।
ঘোড়াকান্দা,ভৈরবপুর,পঞ্চবটি ও কমলপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার গ্রাহকরা জানান, গত ৭/৮ মাস যাবৎ পানি সরবরাহ ঠিকমতো পাচ্ছেনা। বিভিন্ন সময় পানি শাখা বিভাগে ও সাবেক পৌর মেয়রের কাছে অভিযোগ করে ও কোন কাজ হচ্ছেনা। কাজ না হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় সহস্রাদিক গ্রাহক পরিবার পানির জন্য ভোগান্তিতে পড়েছে।
তবে নব নির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর গত ২ সপ্তাহ যাবৎ সাপ্লাইয়ের পানি কলের মুখ দিয়ে একেবারেই অসছেনা। পানি না পাওয়ায় রমজান মাসে রান্না-বান্না ঠিক মতো করতে না পারায় সেহরী ও ইফতার ও ওযু,গোসল ও করতে পারছেননা। তাছাড়া লক ডাউনের কারণে কারো বাড়ি থেকে পানি আনতে যেতে পারছেননা। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই আবার ২/৩ কিঃ মিঃ পথ পাড়ি দিয়ে মেঘনা নদীতে গিয়ে গোসল করে কলস দিয়ে সামান্য পানি আনছেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা যৎ সামান্য। গ্রাহকদের অভিযোগ পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ করে ও পানি পাচ্ছেননা। তবে গ্রাহকদের দাবি পৌর কর্তৃপক্ষ যেন দ্রƒত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করে তাদেরকে দূর্ভোগ থেকে রেহাই দেন।
ঘোড়াকান্দা গ্রামের হাফেজ হাবিবুর রহমান,রোমান মিয়া, হারুন মিয়া জানান, গত ৪ মাস যাবৎ পৌরসভার পানি ঠিক মতো পাচ্ছিনা। পানি না পেলেও পানির বিল কিন্তু ঠিকই পরিশোধ করতে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে গত ২ সপ্তাহ যাবৎ একেবারেই পানি পাচ্ছিনা। এই রমজানে পানি না পাওয়ায় সেহরী ,ইফতার ঠিকমতো করতে পারছিনা। এমনকি ওযু গোসল ও করতে পারছিনা। পানি না পেলে আমরা পৌরসভা ঘেরাও করবো।
একই এলাকার সাধনা বেগম,রহিমা বেগম,জোহেরা বেগম,সেলিনা বেগম সহ অনেকেই জানান, প্রতিদিন সকালে ও বিকালে পানি সরবরাহের কথা থাকলেও পানি পাচ্ছিনা। পানি না পাওয়ায় বাচ্চাদের গোসল ,ওযু ,রান্না-বান্না করতে না পারায় চরম কষ্টের মধ্যে আছি। আমরা পানি চাই পানি না পেলে আমরা বাঁচবো কি করে।
এ বিষয়ে লাইনে ত্রুটির কথা শিকার করেন ভৈরব পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী মো: শাজাহান মিয়া জানান, ১৯৯৯ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কাজ শুরু করে এবং ২০০৭ সালে পৌরসভার কাছে পানি সরবরাহ ( ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) হস্তান্তও করেন। মুর থেকে আমরা ২ শতাধিক গ্রাহক নিয়ে কাজ শুরু করি। বর্তমানে ৫ শতাধিক গ্রাহক রয়েছে।, লাইনে ত্রুটির কারণে পানি সরবরাহে বিঘœ ঘটতে পারে। দ্রুত পানি সরবরাহেরর সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে পানি সরবরাহের লাইনগুলো পুরনো হওয়ায় লাইনে কিছুটা ত্রুটির কারণে সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আশা করছি আমরা মাস দুয়েকের মধ্যে সমস্যা সমাধান করতে পারবো। তখন পানি পেতে সমস্যা হবেনা।
এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেণু কালের কণ্ঠকে জানান, পুরনো লাইনে ত্রুটির কারণে হয়তো পানি সরবরাহে সমস্যা হতে পাওে। তবে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পানি সরবরাহের ব্যস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদী থেকে পানি সরবরাহের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী ৪/৫ মাস পরে আশা করছি নদী থেকে পানি সরবরাহ করে ওয়াটার ট্রিটমেন্টে প্লাান্টের মাধ্যমে গ্রাকদেরকে পানি সরবরাহ করতে পারবো।