অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়ি চালক মোঃ আবদুল মালেক দম্পতির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দুইটি দায়ের করেন।
প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি মোঃ আবদুল মালেক, গাড়ি চালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা (বর্তমানে রবখাস্তকৃত) - এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৯৩ লাক ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সাথে ১ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকা অসঙ্গতি পেয়েছে দুদক। তিনি ওই স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ও উহা তার ভোগ দখলে রাখার অপরাধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪, এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। পরের মামলায় মোঃ আবদুল মালেকসহ তাঁর স্ত্রীকে আসামি করা হয়। এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি (১) নার্গিস বেগম, স্বামী- মো: আ: মালেক এবং (২) আসামি মোঃ আবদুল মালেক, গাড়ি চালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা-এর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ১কোটি ১০ লাখ ৯২হাজার ৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পারস্পারিক যোগসাজশে তার স্ত্রী আসামি নার্গিস বেগমের ভোগ দখলে রাখায় প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং দন্ডবিধি ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য,এর আগে মালেক অবৈধ অস্ত্র ও জাল টাকার কারবারে জড়িত- এমন তথ্য পেয়ে তার উপর নজরদারি চলছিল বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
অষ্টম শ্রেণি পাস মালেক ১৯৮২ সালে সাভার স্বাস্থ্য প্রকল্পে গাড়িচালক হিসাবে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগ দেওয়ার পর বিভিন্ন কর্মকর্তার গাড়ি চালাতেন। র্যাব কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় ২টি সাততলা ভবন, একই এলাকায় একটি বিশাল ডেইরি ফার্ম, ধানমন্ডির হাতিরপুলে সাড়ে ৪ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন ছাড়াও কলাবাগানসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে মালেকের। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থও জমা আছে।
মালেক দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গাড়িচালক হওয়ায় ‘বদলি বাণিজ্য’ও করতেন বলে র্যাবের সন্দেহ। অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালেকের ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নানা দুর্নীতির চিত্র বেরিয়ে আসার মধ্যে সম্প্রতি অধিদপ্তরের অফিস সহকরী আবজাল হোসেনেরও বিপুল সম্পদের তথ্য পায় দুদক। তিনি এখন কারাগারে আছেন।