মাংস বিক্রির নয়শত টাকা চাওয়ায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার এক মাংস বিক্রেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতা ও দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেক।
বৃহস্পতিবার(৪ ফেব্রুয়ারী) রাতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মজিদুল ইসলাম নামে এক মাংস বিক্রেতা। অভিযোগকারী মাংস বিক্রেতা মজিদুল ইসলাম উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবদা শঠিবাড়ি এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেকের কাছে একই ইউনিয়নের শঠিবাড়ি বাজারের মাংস বিক্রেতা মজিদুল ইসলাম ১৫ হাজার ৯শত টাকা পাওনা ছিলেন। কিন্তু গত দুই বছর ধরে সেই টাকা আজ কাল বলে বিলম্ব করেন ইউপি চেয়ারম্যান। এরইমধ্যে গত মাসে চেয়ারম্যান ছালেকের একটি গরু ২৫ হাজার ৫শত টাকা মুল্যে ক্রয় করেন মাংস বিক্রেতা মজিদুল। গরু ক্রয়ের সময় মাংস বিক্রেতা ১০ হাজার ৫শত টাকা চেয়ারম্যানকে প্রদান করেন। অবশিষ্ট অর্থ পুর্বের পাওনা হিসেবে রেখে দেন মজিদুল। এরপরেও ৯শত টাকা পাওনা থাকে মজিদুল। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পুর্বের পাওনা টাকা অস্বীকার করে পুনরায় তার গরু বিক্রয়ের টাকা দাবি করেন মাংস বিক্রেতার কাছে।
এ ব্যাপারে বুধবার(৩ ফেব্রুয়ারী) রাতে পাওনা টাকার হিসাব নিয়ে শঠিবাড়ি বাজারের সাবু মিয়ার দোকানে উভয় পক্ষের লোকজন বৈঠকে বসেন। এ সময় মাংস বিক্রেতা পুর্বের পাওনা টাকা চাওয়া মাত্রই বিএনপি নেতা ছালেকুজ্জামান তার উপর চড়াও হয়ে গালমন্দ ও মারপিট করেন। স্থানীয়রা প্রথম পর্যায়ে তাকে শান্ত করেন। এর কিছুক্ষন পর বিএনপি নেতার ডাকে তার লোকজন লাঠি শোটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে শঠিবাড়ি বাজারে শোডাউন দিলে মুহুর্তের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং লোকজন দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে শুরু করেন।
বিএনপি নেতার লোকজনের রোসানল থেকে কোন রকমে পালিয়ে রক্ষা পান মাংস বিক্রেতা। এ সময় বিএনপি নেতার লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে মাংস বিক্রেতা মজিদুল ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকী প্রদান করে চলে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় বিচারচেয়ে বিএনপি নেতা ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেককে প্রধান করে ৭জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে আদিতমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মাংস বিক্রেতা মজিদুল ইসলাম।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেক বলেন, আমি মজিদুলের কাছে গরু বিক্রয়ের ৯ হাজার টাকা পাই। সেটা চাইতে গিয়ে বিতর্ক হয়েছে মাত্র। তবে মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি। বিতর্কের ঘটনা শুনে তার পরিবারের লোকজন এসেছিল ঠিকই কিন্তু তাদের হাতে লাঠিসোটা ছিল না। পরে তাদেরকে আমি বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীর সাথে বিএনপি নেতা ছালেকুজ্জামানের সাথে ঝামেলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।