চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে স্কুলের বই পরিবহণের টাকা দিয়ে বনভোজনের অভিযোগ উঠেছে নাচোল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। ২০২০ শিক্ষাবর্ষে উপজেলা পরিষদ থেকে ৩৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৫টি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বই পৌছানোর পরিবহণ খরচের টাকা প্রদান না করে সেই অর্থ দিয়ে নাচোলের একটি পার্কে বনভোজন ও মতবিনিময় করেছেন।
জানাগেছে, গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের দোগাছি স্বপ্নপল্লী পার্কে এ মতবিনিময় সভা ও বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়। তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ ফ ম হাসান বিষয়টি অস্কীকার করে বলেন, বই পৌছানোর খরচের টাকা নয় শিক্ষকদের নিকট থেকে চাঁদা তুলেই এই মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ ফ ম হাসানের আমন্ত্রণে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খাদিজা বেগম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালিকসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫০ জন প্রতিষ্ঠান প্রধান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০২০ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বই পরিবহণের জন্য ৪৫ হাজার টাকা সরকার এই উপজেলার জন্য বরাদ্দ দেন। কিন্তু বরাদ্দের টাকা দেরীতে আসায় সে টাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ ফ ম হাসান কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন।
সম্প্রতি শিক্ষা বিষয়ক একটি সভায় বরাদ্দকৃত টাকা না পাওয়া নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে গন্ডগোলের সৃষ্টি হলে শিক্ষা অফিসার আ ফ ম হাসান বার্ষিক বনভোজনের মাধ্যমে এই টাকা খরচ করবেন বলে শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেন। ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সেই টাকা দিয়ে পিকনিক করা হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে। তারা আরো অভিযোগ করেন, ২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বই পরিবহণের বরাদ্দ টাকার বাইরে বনভোজনের জন্য প্রত্যেকে শিক্ষকের নিকট থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ ফ ম হাসান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিটি শিক্ষকের কাছ থেকে ২০০ টাকা আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকদের এই টাকায় এরকম অনুষ্ঠান করা সম্ভব ছিল না। তবে পার্ক ভাড়া, ডেকোরেটার ভাড়াসহ অনেক কিছুই ফ্রি পাওয়া গেছে। তবে স্কুলের বই পরিবহণের টাকা প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে প্রদানের ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।