মহান বিজয় দিবসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্তৃক জাতীয় পতাকা বিকৃত করে প্রদর্শন করে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অন্যদিকে ওই ঘটনায় বৃহসপতিবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক বাদী হয়ে নগরীর তাজহাট থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানীকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ ছাড়া রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার জিন্নাহ আল মামুন ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলুকে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা জয়েছে বলে জানান।
এদিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। তারা ঘটনা স্থল স্বাধীনতা স্মারক পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড, আতিয়ার রহমানের সাথে কথা বলার জন্য প্রশাসনিক ভবনে তার দপ্তরে যান। সেখানে আরো কয়েকজন সহকারী প্রক্টর তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। পৌনে এক ঘন্টা ব্যাপি বৈঠক শেষে সেখান থেকে বেরিয়ে তদন্ত কমিািটর প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের জানান আমরা প্রক্টরের সাথে কথা বলেছি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের কি কি কর্মসূচি ছিলো তার কর্মসূরি কপি সংগ্রহ করেছি। শনিবার অভিযোগকারী সহ অন্যান্যের সাথে কথা বলবো এ ছাড়াও তদন্তের প্রয়োজনে আর যা যা করনীয় তা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ ৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রংপুর মেট্টোপলিটন তাজহাট থানায় জাতীয় পতাকার বিকৃতি ও অবমাননার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় লিখিত অভিযোগে জানা গেছে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্তরে জাতীয় পতাকার নকশা পরিবর্তন করে সবুজের ভেতর লাল বৃত্তের পরিবর্তে চারকোণা লাল আকৃতির পতাকা বানিয়ে পোজ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। এই ছবি আবার সামাজিক যোগাযোগ মা:ধ্যম ফেস বুকে পোষ্ট করেছেন তারা। এতে সংবিধানের ৪(২) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় তারা স্বাধীনতা স্মারক চত্তরে জাতীয় পতাকা মেঝেতে ও পায়ের নিচে স্পর্শ করে ছবি তুলে প্রকাশ করেছেন যা সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রদোহিতার অপরাধ করেছে। এতে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের হুকুমের আসামি হিসেবে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহকে দায়ী করা হয়। অপর আসামিরা হলেন, শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান, সিন্ডিকেট সদস্য ও গনিত বিভাগের প্রধান হাফিজুর রহমান সেলিম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পরিমল চন্দ্র বর্মণ, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হক, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সোহাগ আলী ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রহমতুল্লাহ। এর আগে বৃহসপতিবার সন্ধায় বেরোবি ছাত্র লীগের সাবেক সহ সভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ ৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান জানান দুটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। যেহেতু রাষ্ট্রদ্রোিিহতার অভিযোগ সে কারণে প্রয়োজনীয় অনুমতি গ্রহন করার জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে জানানোর কাজ চলছে।