দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা ঝিনাইদহ। এ জেলার একেবারে ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা উপজেলা মহেশপুর। ১৮৬৯ সালে কপোতাক্ষ নদের তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় মহেশপুর পৌরসভা বা টাউন কমিটি। প্রথম ইংরেজ মেয়র পিবি মার্টিনের হাত ধরে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী এ পৌরসভা বা টাউন কমিটির কার্যক্রম।
বর্তমানে ২৪ তম মেয়র হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আবদুর রশিদ খাঁন। ১৯৫২ সালে আবদুর রশিদের দাদা শাহজাহান আলী খাঁন ১১তম মেয়র হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। এরপর চাচা শামছুল হুদা খাঁন তিন বার এবং চাচাতো ভাই শফিকুল আজম খাঁন দুইবার এই পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। শফিকুল আজম খাঁন বর্তমানে ঝিনাইদহ-৩ আসনের সরকার দলীয় দ্বিতীয় মেয়াদের সংসদ সদস্য। দেশে স্থাপিত দ্বিতীয় এ পৌরসভার উন্নয়ন আর আগ্রগতি নিয়ে এফএনএস’র সাথে কথা বলেছেন পৌর মেয়র আবদুর রশিদ খাঁন।
এফ এন এস: মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে অন্য কোন নির্বাচন করেছেন কি না?
আব্দুর রশিদ খাঁন: ২০১১ সালে মহেশপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচন করেছিলাম। সেবার ২৩২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রায় সাত হাজার ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হয়।
এফ এন এস: কখন থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন?
আব্দুর রশিদ খাঁন: পারিবারিকভাবে আমি আওয়ামলীগের আদর্শে বড় হয়েছি। ১৯৭৯ সালে ঝিনাইদহ কেসি কলেজে পড়ার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতে খড়ি। এরপর ৯০ এর দশক থেকে মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি সম্পাদক ও মহেশপুর পৌর আওয়ামলীগের সাধারন সম্পাদক হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করি।
এফ এন এস: মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর উল্লেখযোগ্য কি কি উন্নয়ন করেছেন?
আব্দুর রশিদ খাঁন: ড্রেন, রাস্তা, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির লাইনসহ আর্সেনিক ও আইরণ রিমোভাল পানির প্লান্ট, সোলার স্ট্রীট লাইট, মাছ বাজার স্থাপনসহ প্রায় ৩১ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি। এরমধ্যে পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে ২৮ কোটি ৭১ লাখ এবং এডিপি’র অর্থায়নে এক কোটি ৯০ লাখ টাকার এসব উন্নয়ন কাজ করা হয়।
এফ এন এস: বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ২৫ পৌরসভার তফশীল ঘোষণা করেছে। ধাপে ধাপে মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আপনি কি আবারও নির্বাচন করবেন?
আব্দুর রশিদ খাঁন: আমি বর্তমান ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসাবে মেয়র নির্বাচিত হয়ে দ্বায়িত্ব পালন করছি। আসন্ন নির্বাচনে দল মনোনয়ন দিলে অবশ্যই নির্বাচন করবো। তাছাড়া এ পৌরসভা এলাকাটি বিএনপি ও জামায়াত অধ্যুষিত। এবার নির্বাচনে জামায়াতের কোন প্রার্থী থাকবে না। যে কারণে নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী থাকলে জামায়াতের সমর্থকরা তাকে ভোট দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ফলে শক্ত প্রার্থী না হলে পৌরসভাটি হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে
এফ এন এস: আপনি নিজেকে যোগ্য প্রার্থী মনে করেন কি?
আব্দুর রশিদ খাঁন: অবশ্যই, যোগ্য বলেই দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। আমি নির্বাচনে জয়ী হয়ে যোগ্যতার সে প্রমাণও দিয়েছি।
এফ এন এস: আবারও নির্বাচিত হলে পৌরসভার উন্নয়নে আপনার পরিকল্পনা কি? কোন কোন কাজে অগ্রাধিকার দেবেন?
আব্দুর রশিদ খাঁন: ঘন্টায় ১ লাখ ৮০ হাজার লিটার পানি সরবরাহের ক্ষমতা সম্পন্ন আর্সেনিক ও আইরণ রিমোভাল বিশুদ্ধ পানির প্লান্ট স্থাপন করার কাজ চলছে। প্লান্ট থেকে তিন হাজার পরিবারকে বিশুদ্ধ পানি দেওয়া পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও ময়লা অপসারণে সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।
এফ এন এস: করোনাকালীন কি কি কাজ করেছেন?
আব্দুর রশিদ খাঁন: করোনা সংক্রমনের শুরুতেই পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্যরা এ পর্যন্ত পৌর এলাকার ৫০ মসজিদে মাস্ক বিতরণ করেছে। পৌর এলাকার লকডাউন করা ৩৩ জনের বাড়িতে খাবার ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পৌছে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
এফ এন এস: পৌরবাসির জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আব্দুর রশিদ খাঁন: সুন্দর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন মহেশপুর পৌরসভা গড়ে তোলা। এ ছাড়া পৌরবাসির চিত্তবিনোদনের জন্য একটি আধুনিক পার্ক তৈরি করার পরিকল্পনায় রয়েছে।