নওগাঁর পত্নীতলায় রোববার বিকেলে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে জনসম্মুখে বড় ভাই কর্ত্তৃক ছোট বোনকে অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর এই ঘটনা ঘটেছে উপজেলা সদর নজিপুর বাসষ্ট্যান্ডে শত শত মানুষের সামনে। বড় ভাই কর্ত্তৃক ছোট বোনকে প্রকাশ্যে দিবালোকে বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত শত শত মানুষ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং নির্যাতনকারী ভাইয়ের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেছেন। এদিকে আহত বোন বর্তমানে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর মাথায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নজিপুর পৌরসভার ছোট চাঁদপুর মহল্লার মৃত তাছির উদ্দিনের ছেলে হোমিও ডাক্তার ডাঃ সামসুজ্জোহা। নিজ বাড়িতে প্যাকটিস করার পাশাপাশি নজিপুর বাসষ্ট্যান্ডে জোহা হোমিও হল নামে তাঁর একটি হোমিও চেম্বার রয়েছে। পাশেই রয়েছে ছোট বোন তহুরা বানু ইতির (৪২) কারু শিল্প নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বেশ কিছুদিন ধরেই পৈত্তিক সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার বিকেল আনুমানিক ৩টায় ছোন বোন ইতি বড় ভাই ডাঃ সামসুজ্জোহার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাঁর সম্পত্তি বুঝে দেওয়ার জন্য বললে উভয়ে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বড় ভাই ডাঃ সামসুজ্জোহা ছোট বোন ইতিকে বেধড়ক পিটাতে থাকে। এতে ইতির মাথা ফেটে গেলে সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে পড়লে সে একসময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ ঘটনা অনেক পথচারি দেখলে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে ওবায়দুল ইসলাম মিন্টু নামে এক ব্যক্তি স্থানীয়দের সহায়তায় ইতিকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বর্তমানে সেখানেই তিনি কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ইতির মাথা ফেটে যাওয়ায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মাথা ছাড়াও ডান হাত, কোমর ও হাঁটুর নীচে সে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে আহত ইতির স্বামী আরিফ হোসেন সুমন জানান, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পৈত্তিক সম্পত্তি রদলবদল করা হয়েছে। আমার স্ত্রী ইতি ভাইকে সম্পত্তি ছেড়ে দিলেও ভাইয়েরা তাঁকে তাঁর সম্পত্তি বুঝে দিতে টালবাহানা করে আসছে। এ বিষয়ে বারবার তাদের বলা হলেও তাঁরা কর্ণপাত করছেন না। সর্বশেষ রোববার ইতি একই বিষয়ে তাঁর বড় ভাই ডাঃ সামসুজ্জোহাকে তাগাদা দিলে গেলে বড় ভাই তাকে পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে এবং মাথা ফেটে দেয়। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে থানায় মামলা করা হবে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে মতামত গ্রহণের জন্য ডাঃ সামসুজ্জোহার মুঠোফোনে সোমবার দুপুরে বার বার কল দিলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় তাঁর মতামত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পত্নীতলা থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ সামসুল আলম শাহ্ জানান, ঘটনার পর ডাঃ সামসুজ্জোহাকে জিজ্ঞাসাবেদর জন্য আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।