ফরিদপুরে আলোচিত সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের ভাই মন্ডল ইসতিয়াক হাসান জুয়েল মন্ডলকে (৪১) চাকুরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার কৃষি সম্বপ্রসারণ অধিদপ্তরের ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রিফাতুল হোসাইন স্বাক্ষরিত ‘অফিস আদেশ’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এ আদেশের কপি বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের হাতে পৌঁছায়।
ওই আদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু মন্ডল ইসতিয়াক হাসান উপ সহকারি প্রশিক্ষক অধ্যক্ষের কার্যালয় কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ফরিদপুর এর বিরুদ্ধে পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় গত ১৮ মে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা (৩১ নম্বর মামলা) হয়েছে। ওই মামলায় পরওয়ানা জারী হওয়ায় গত ১৮ আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেহেতু বিএসআর পার্ট-১ এর ৭৩ বিধি অনুযায়ী গ্রেপ্তারের তারিখ থেকে তাকে চাকুরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হরা হলো। বিধি মোতাবেক তিনি খোরপোষ প্রাপ্ত হবেন।
প্রসঙ্গত গত ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের একটি দল ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
জুয়েল মন্ডল ফরিদপুর শহরের বদরপুর এলাকার মৃত সালাম মন্ডলের ছেলে। তিনি ফরিদপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপ-সহকারি প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
জুয়েল মন্ডলের ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক। তার অপর ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিস্কৃত সভাপতি।
বরকত ও রুবেলকে গত ৭ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার ফরিদপুর শহরের মোল্লা বাড়িসড়কস্থ বাসায় গত ১৬ মে রাতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। গত ১৮ মে সুবল চন্দ্র সাহা ওই হামলার ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলাদায়ের করেন। ওই মামলার আসামি হিসেবেই গ্রেপ্তার করা হয় জুয়েল মন্ডলকে।
ফরিদপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ জি এম আবদুর রউফ বলেন, জুয়েল মন্ডল গ্রেপ্তার হওয়ার খবর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এ প্রেক্ষাপটে তাকে চাকুরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে হামলাসহ পুলিশের বিশেষ অভিযানে এ পর্যন্ত জুয়েল মন্ডলসহ মোট ১৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যান্য উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার, জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন ও শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম রয়েছেন।
জুয়েল মন্ডল বর্তমানে ফরিদপুর কারাগারে রয়েছেন। গত ১৯ আগস্ট কোতোয়ালি থানার পুলিশ তার সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করলে আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ পরে ধার্য করার ঘোষণা দিয়ে জুয়েল মন্ডলকে জেলা কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।