কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিশু, বিশেষ করে যারা শহর বা গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
করোনার কারণে দেশব্যাপী সরকার ঘোষিত প্রায় ৯০ দিন অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কখনো খন্ডকালীন ও কখনো সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় এবং লকডাউনে কার্যতঃ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়ায় দেশের প্রায় ৭৮.০৩ ভাগ পরিবারের উপার্জন কমে গেছে এবং অনেক পরিবারের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৯৫ ভাগ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় মানুষ চরম সংকটে পড়েছেন ।
বেসরকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সংস্থাটির বাংলাদেশস্থ অন্তর্বর্তীকালীন ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন গোমেজ জানান, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের ৫২টি উপজেলার ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১৬১৬ জন শিশু ও ২৬৭১ জন প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তির উপর জরিপ চালিয়ে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে র্যাপিড ইম্প্যাক্ট এ্যাসেসমেন্ট নামে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে, জরিপ এলাকার ৯৪.৭ ভাগ পরিবারে খুব সামান্য খাবার আছে অথবা কোন খাবার সঞ্চিত নেই। ফলে ৩৮.৫ ভাগ শিশু এবং ৫৮.৯ ভাগ প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তি দিনে সর্বোচ্চ দুইবেলা খেতে পারছেন না। এছাড়া ৫৮ ভাগ পরিবার খুব কম খাবার খেয়ে দিন পার করছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪৫ ভাগ শিশু। এ সব শিশুর মধ্যে ৪৬ ভাগ দ্রারিদ্র এবং এর এক-চতুর্থাংশ অতিদারিদ্রতার মধ্যে বেড়ে উঠছে। ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্ম এলাকাগুলোতে তারা জরীপ চালিয়ে দেখেছে খাদ্য সংকটের কারণে অপুষ্টির মত সমস্যায় শিশুরা অধিক মাত্রায় সংক্রমিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে চন্দন গোমেজ জানান, ওয়ার্ল্ড ভিশন শংকিত, বিশেষ করে ৫ বছরের কম বয়সী সেই সকল শিশুদের নিয়ে যারা অপুষ্টির মত প্রতিরোধযোগ্য সংক্রমনের ঝুঁকির মধ্যে আছে, যা দেশে শিশু মৃত্যুর হার বাড়িয়ে তুলতে পারে।
চন্দন গোমেজ বলেন “আমি শংকিত সেই ৮৭% শিশুদের নিয়ে যারা বাড়িতে থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে এবং ৯১.৫% শিশু যারা কোভিড-১৯ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ।” তিনি বলেন- রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের শিশু এবং তাদের পাশর্^বর্তী জনবসতিসহ বাংলাদেশের সকল শিশুর বর্তমান সমস্যা সমাধানে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরন ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।