জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত।
প্রসঙ্গত গত ১৬ মে রাতে সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। গত ১৮ মে এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন সুবল সাহা। গত ৭ জুন রাতে শহর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, তাঁর ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি সম্পাদক ইমতিয়াজ হাসানসহ মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া অন্য ব্যাক্তিরা হলেন, রেজাউল করিম বিপুল, ফরিদপুরের পৌর কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান মামুন, বর্ধিত ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নারায়ণ চক্রবর্তী, ইয়াসমিন সুলতানা বর্ণা মন্ডল, এনামুল ইসলাম, অমিয় সরকার ও জাহিদ খান।
এ প্রেক্ষাপটে গত ৮ জুন রাতে ফরিদপুর শহর আ.লীগ জরুরী সভায় মিলিত হয়ে দলীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদ সহ সকল পদ হতে সাজ্জাদ হোসেনকে বহিস্কার করার জন্য সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়টি শহর আ.লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার সাক্ষরিত একটি পত্র থেকে জানা গেছে। অব্যাহতি ও বহিস্কারের সুপারিশ সম্বলিত ওই পত্রটি ওই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রদান করে তাদের সুপারিশসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়।
‘ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত’কে দলীয় পদণ্ডপদবী হইতে বহিস্কার করণ প্রসঙ্গে’ শীর্ষক সুপারিশ পত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ফরিদপুর শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত-এর বিরুদ্ধে “সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, তার দখল হইতে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মানি লন্ডারিং, সর্ব সাধারণের জমি দখলের অভিযোগ, নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি হামলা মামলাসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর জেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়ীতে হামলা-ভাংচুর সহ দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের কারনে” বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর শহর শাখার উদ্যোগে গত ৮ জুন তারিখে এক জরুরী সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় সাজ্জাদ হোসেন বরকত-এর অবৈধ কর্মকান্ডের কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্যে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্তক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭(ক) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক পদ হইতে সাজ্জাদ হোসেন বরকত’কে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং তাকে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদ সহ সকল পদ হইতে বহিস্কার করার জন্য সুপারিশ সহকারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর জেলা শাখার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রেরনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
ওই সুপারিশপত্রে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর শহর শাখার গত ৮ জুনের ইং তারিখের জরুরী সভার সিদ্ধান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন জানাই।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহা বলেন, সাজ্জাদ হোসেনকে বহিস্কারের সুপারিশ সম্বলিত চিঠি মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তিতি হাতে পাননি। তিনি বলেন, এ জাতীয় চিঠি পেলে তিনি সুপারিশ করে কেন্দ্র পাঠিয়ে দেবেন। কেননা বহিস্কারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রই সংরক্ষণ করে।
এদিকে সাজ্জাদ হোসেন, তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান ও রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই তিনটি মামলার বাদী হয়েছে কোতোয়ালি পুলিশের তিন উপপরিদর্শক (এসআই)।
সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, রেজাউল করিম বিপুল তিন ও ফরিদপুরের পৌর কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমানের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে গত সোমবার সন্ধ্যায়। মঙ্গলবার থেকে তাদের চারজনের রিমান্ড শুরু হয়েছে।