চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদমিনার থাকলেও প্রায় দেড়শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদমিনার। স্বাধীনতার ৪৯বছর পেরিয়ে গেলেও খোদ উপজেলা পরিষদ চত্বরেই ভাষা শহীদদের স্মরণে স্থাপিত হয় নি শহীদ মিনার। নাচোল উপজেলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮৭টি, ১টি শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি প্রতিবন্ধি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৫টি মাদ্রাসা ও ১১টি কলেজ এবং ৩০টি কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়। সব মিলিয়ে নাচোলে প্রায় ১শ’ ৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মহান স্বাধীনতার প্রায় ৪৯বছর পেরিয়ে গেলেও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার। প্রায় ৬৮বছর পূর্বে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে অকুতভয় বাংলা মায়ের সন্তানেরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয় রাজপথে। দীর্ঘ ৯মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানকে পরাজিত করে ১৯৭১সালে ১৬ ডিসেম্বর পরাধীনতার শৃংখলমূক্ত হয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা একটি লালসবুজের পতাকা ও স্বাধীন ভূখন্ড লাভ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হয়েছে বাংলা ভাষা। শুধু তা’ই নয় আন্তর্জাতিক ভাবেও মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে বাংলা ভাষা। আন্তর্জাতীক মাতৃভাষাদিবস কী এবং এর পটভূমি কী ছিল সে সম্পর্কে এ কালের শিক্ষার্থীরা পাঠ্য বই পড়ে আবছা ধারণা পেলেও এর প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে অজানা রয়ে যাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে। পাঠ্য বই এর পাতায় অঙ্কিত শহীদমিনার দেখে শ্রদ্ধাবোধ আর বাস্তবে নির্মিত শহীদমিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো এক নয়। যা অনুধাবন করা জরুরী হয়ে পড়েছে বিজ্ঞজনদের কাছে। বর্তমান প্রজন্ম এমনটিই আশা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা জানান, যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে আনুষ্ঠানিকভাবে ওইসব শহীদ মিনারে স্থানীয় এলাকার শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবেন। বাকী ১শ’৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে যথাযথ শ্রদ্ধা জানিয়ে দিবসটি পালন করবেন এমনটিই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে। দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত বক্তৃতা ও শিশুদের চিত্রাংঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণের অয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন পর্যায়ক্রমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এবছর সকল সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা যথাযথ মর্যাদায় অর্ধনমিত রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে উপজেলা প্রশাসন থেকে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে কয়েকটি উপকমিটিও গঠন করা হয়েছে।