ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে চরসুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গত রোববার বিকেলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগী শেষে বহিঃরাগতের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষক কিল-ঘুষির আঘাত সহ দুই অভিভাবক ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত অভিভাবকরা হলো-উক্ত ইউনিয়নের শেখ তাসেরের ছেলে শেখ আনছার উদ্দিন (৫৫) ও শেখ কাসেমের ছেলে শেখ কামরুল (২৮)। লঞ্চিত শিক্ষকরা হলেন-উক্ত বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওঃ আবুল বাশার ও সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক রাশেদুজ্জামান।
ঘটনার দিন রাতে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক বিভুতি ভুষন বাদী হয়ে চরভদ্রাসন থানায় একটি অভিযোগ পত্র পেশ করেছেন। অপরদিকে বহিঃরাগতদের পক্ষ থেকে সাখাওয়াত বেপারী বাদী হয়ে আরেকটি অভিযোগ করেছেন। এ ব্যপারে তদন্ত কর্মকর্তা চরভদ্রাসন থানার ওসি (তদন্ত) আঃ গাফ্ফার জানান, “ হামলার খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছেন। আমরা দু’পক্ষের অভিযোগ পত্র পেয়েছি, সঠিক তদন্ত করে মামলা নেওয়া হবে”।
উক্ত বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই দিন বিকেলে বিদ্যালয় মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা শেষে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। এ সময় বহিঃবাগতদের ভীর সামলাতে গিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক মাওঃ আবুল বাশারের সাথে পার্শ্ববতী বেপারী ডাঙ্গী গ্রামের প্রভাবশালী মাতুব্বর কবিরুল আলমের ছেলে রাতুল বেপারী (২৮) এর কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রাতুল বেপারী শিক্ষককে আঘাত করলে আরেক শিক্ষক রাশেদুজ্জামান এগিয়ে আসেন। রাতুল বেপারী তাকেও আঘাত করার পর বিদ্যালয় ছাত্ররা সহ স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সবাই মিলে বহিঃরাগত রাতুল বেপারীকে ধাওঁয়া করে বিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার কিছুক্ষন পরে রাতুল বেপারী প্রতিহিংসার জে¦র ধরে দেশীয় অস্ত্র সহ ২০/২৫ জনের সংঘবদ্ধ দল নিয়ে বিদ্যালয় ঘিরে হামলার করতে থাকে।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জানান, স্থানীয় রাতুল বেপারী (২৮) সাখাওয়াত বেপারী (৪০) রাজু (৩০) আকমাল (৩২) সোরহাব (৪০) আসাদ (২৫) ইমরান (২২) জাহাঙ্গীর (৩১) আলমগীর (৩২) জাহিদ বেপারী (৩৫) আঃ কুদ্দুস (৩৮) সহ ২০/২৫ জনের দল রাম দ্যা, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়ার নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ঢুকে হামলা করে। এ সময় শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা আত্মরক্ষার্থে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। কিন্তু দুই অভিভাবক হামলাকারীদের আঘাতে গুরুতর আহত হয়।
এ ব্যাপারে রাতুল বেপারীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নাই। তবে সোমবার রাতুল বেপারীর পিতা উপজেলার চরহাজীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মাতুব্বর কবিরুল আলম বলেন, “ দুই অভিভাবকের ওপর আমরা হামলা করি নাই, স্কুল পক্ষের লোকজনের আঘাতে তারা আহত হয়েছেন”। আর বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল বাশার বেগ বলেন, “নিজেদের অপকর্ম ঠেকানোর জন্য বহিঃরাগত মাতুব্বর পক্ষ থানায় পাল্টা অভিযোগ করেছেন। অবিলম্বে চিহ্নিত আসামীদের গ্রেফতার করা না হলে বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে”।