জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে। সেই সংসদে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে তারাই দেশ পরিচালনা করবে। পদত্যাগ পদত্যাগ বললে হবে না। এখন যারা আছেন তাদের পদত্যাগ করতে হবে। আর যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে লাথি মেরে দেশ থেকে বের করে দিতে হবে। সত্যিকার অর্থে উন্নয়নের নামে যে লুটপাট হয় তা থেকে দেশকে মুক্ত করতে দেশের মালিক জনগণকে আবার দাঁড়াতে হবে।’
খালেদা জিয়ার দুই বছর কারাবাসের প্রতিবাদে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে তার মুক্তির দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়াজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতার ৪৮ বছরে কেউ দেশে রাজবন্দি হবে শুনতে কেমন লাগে উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘আজ বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সভা করতে হচ্ছে এটা দুঃখের বিষয়। এখন সভা সমাবেশে নয়, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকে সামনে রেখে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। চলেন আমরা মালিক হিসেবে ভূমিকা রাখি। যারা আমাদের ক্ষমতাকে আত্মসাৎ করেছে তাদের চিহ্নিত করি।’
দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন দাবি করে ড. কামাল বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে দেখেছি, জনগণের অধিকার বঞ্চিত করে কেউ স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। এরপরও যারা স্বৈরাচার চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সেই ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে দেখা দরকার। কারন বাঙালি কখনও স্বৈরাচরকে মেনে নেয়নি। তারা রাষ্ট ক্ষমতাকে জবরদখল করে রেখেছে। তাই সব মানুষের পক্ষে বলতে হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা চাই, শান্তিপূর্ণভাবে দেশটাকে মানুষের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আমি বিএনপি করি না। ঐক্যফ্রন্ট গঠন করার আগে আমরা ৮ দফা দাবি দিয়েছিলাম। দাবিগুলোর মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ কোনো দাবিই পূরণ হয়নি। কিন্তু গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়ার মুক্তি জরুরি। তবে শেখ হাসিনাকে বলতে চাই, আপনি কি শান্তিমতো ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবেন নাকি অন্যভাবে যাবেন। সিটি নির্বাচনে মানুষ ভোট না দিয়ে প্রমাণ করছে গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা পরিবর্তন হবে না। তাই তারা ভোট দিতে যায়নি। জনগণ রাস্তায় নামার জন্য প্রস্তুত। এখন সময় আছে শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নেন। না হলে কীভাবে হবে তা বোঝতেও পারবেন না।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে কিছুটা উৎসাহিত করেছিলাম। তাই তার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির কোনো নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে না।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে ফ্রন্টের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। আজ না হোক, এক মাস কিংবা দুই মাস পরে। তা না হলে জনগণই আন্দোলনের পথ বেছে নেবে। আমাদের আন্দোলনে নামতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক নুরল আমিন ব্যাপারী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির শহীদুল¬াহ কাউসার, ফ্রন্টের দপ্তরের নেতা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।