ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আবদুল নুর নামক এক পল্লী চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসায় আসাদুল্লাহ (৯) নামের এক স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মুত্যু হয়েছে। স্কুল ছাত্রের এ মুত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় ওই পল্লী চিকিৎসক ও তার সহকারীর বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার রাতে কসবা থানায় মামলা রুজু করেছে নিহতের পরিবার। নিহত আসাদুল্লাহ আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ধর্মনগর গ্রামের আল-আমিন মিয়ার ছেলে। সে কর্মমঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
মামলার এজাহার, স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের মিরতলা গ্রামের আবদুল নুর কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোসাইস্থল বাজারে পল্লী চিকিৎসক হিসাবে ওষুদের ব্যবসা করেন। গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আসাদুল্লাহ খেলতে গিয়ে হাতে ব্যাথা পায়। বিষয়টি স্থানীয় পল্লী চিকিৎক আবদুল নুরকে দেখায় শিশুটি অভিভাবক। তার হাতের এক্সরে করে দেখার পরামর্শ দেন ওই পল্লী চিকিৎসক। গত বৃহস্পতিবার ওই পল্লী চিকিৎসককে সাথে নিয়ে শিশু বাবা আল আমিন কসবা উপজেলার সদরের একটি বে-সরকারি ক্লিনিক থেকে হাতের এক্সরে করেন। এ সময় দেখতে পান শিশুটির হাতের হাড় ফেটে গেছে। হাতের প্লাষ্টার করতে হবে। তখন আবদুল নুর আসাদুল্লাহর বাবাকে বলেন তিনি অনেক প্লাষ্টার করেছেন। এটিও তিনি করতে পারবেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় গোসাইস্থল বাজারে তারঁ ওষুদের দোকানে নিয়ে যায় শিশুটির অভিভাবকরা। এ সময় প্লাষ্টার করার সময় পরপর কয়েকটি ইনজেকশান পুশ করা হয় শিশুটিকে। একপর্যায়ে শিশুটি ইনজেকশান পুষ না করতে বললেও ইনজেকশান পুষ করা হয়। ইনজেকশান পুশ করার কিছুক্ষনের মধ্যেই শিশুটির খিচুনী উঠে। আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি। টের পেয়ে পল্লী চিকিৎসক ও তার সহকারী জালাল মিয়া ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
নিহত আসাদুল্লাহ’র বাবা আল আমিন মিয়া বলেন, এক্সরে করে জানতে পারলাম আমার ছেলের হাত ভেঙে গেছে। ভাল হাড় বিশেষজ্ঞ দিয়ে প্লাষ্টার করার কথা বললে আবদুল নুর ডাক্তার বললেন তিনি প্লাষ্টার করতে পারবেন। তিনি নাকি আরো অনেক প্লাষ্টার করেছেন। প্লাষ্টার করার জন্য দুটি ইনজেকশান দিয়েছে। আমার ছেলে ডাক্তারকে বলেছে, আংকেল আমার হাত ব্যথা করে না। আমাকে আর ইনজেকশান দিয়েন না। আমার বুক ধরপর করছে। তিনি আরো একটি ইনজেকশান দিয়েছেন। সাথে সাথে আমার ছেলে মারা গেছেন বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন।
কসবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশাদুল ইসলাম বলেন, পল্লী চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসায় স্কুল ছাত্র আসাদুল্লাহ মারা গেছে। স্কুল ছাত্রীট মারা যাওয়ার পর থেকেই আবদুল নুর ও তার সহকারী জালাল মিয়া পালিয়ে গেছে। নিহতের লাশ প্রাথমিক সুরোতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক আবদুল নুর এর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায় নাই।