কসবার শেরেবাংলা উচ্চবিদ্যালয়ের গ্যাস ও পানির চাপে গভীর নলকূপের পাইপ উপড়ে গিয়ে অনবরত গ্যাস, পানি ও বালি উঠতে থাকলে বিদ্যালয়সহ অষ্টজংগল গ্রাম এখন হুমকীর মুখে। খবর পেয়ে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রশাসন লাল পতাকা উড়িয়ে পুরো এলাকা কর্ডন করে দেয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানও গ্রামে কেউ যাতে চুলায় আগুন না ধরায় মাইকে প্রচার করে সাবধান করে দেন।
কসবা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার অদূরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গ্যাস ও পানির তুরে উদগিরিয়ে আসা বালিতে শেরে বাংলা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ সয়লাব হয়ে গিয়েছে। গ্যাসের গন্ধে পুরো এলাকায় এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শত শত নারী-পুরুষ বিদ্যালয়ের দেয়ালের চারপাশে ঘিরে আছে।
প্রধান শিক্ষক ও বায়েক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল মামুন ভুইয়া জানান, বিদ্য¬ালয়ের পানিয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি গভীর নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে বরাদ্ধকৃত ওই গভীর নলকূপটি গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ১৫ জন শ্রমিক বসানোর কাজ শুরু করে। গতকাল রাতে ৫৪০ ফুট বরিং করার পর বালি ও পানির স্তর পাওয়া যায়। আজ সকালে শ্রমিকরা সেখানে পানির ফিল্টার পাইপ স্থাপনের জন্য বুরিং পাইপ উত্তোলণের সময় ওই পাইপ গ্যাস, পানি ও বালির চাপে পাইপ উপড়ে যায় এবং শ্রমিকরা ১৫/২০ ফুট উপর থেকে ছিটকে নীচে পরে যায়। এমতাবস্থায় প্রায় ১২০ ফুট পর্যন্ত পানি, বালি ও গ্যাস উপরে উঠতে থাকলে এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক প্রশাসনের নির্দেশে তাৎক্ষণিক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল ছুটি ঘোষণা করেন। চলতি দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় পুলিশ ও বিজিবি সদস্য দ্বারা স্কুল কর্ডন করে লাল পতাকা উড়িয়ে দেন এবং সেখানে নজরদারী ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। অনবরত পানি, গ্যাস ও বালি বুদ বুদ আকারে উঠে বিদ্যালয়ের মাঠ ভরে বালি ও পানি গড়িয়ে আশে পাশের জমিতে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাঠে প্রায় ১ ফুট বালি স্তর পরে গেছে। পুরো এলাকা গ্যাসের আচ্ছন্ন হওয়ায় জনসাধারণকে চুলা জ¦ালানো বন্ধ রাখার ও আশপাশে আগুন না জ¦ালাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, এই ঘটনা শুনে শত শত নারী-পুরুষ বিদ্যালয়ের গেইটের বাহির থেকে এ দৃশ্য দেখছেন। তবে সবাই আতঙ্কিত হয়ে আছেন সিলেটের মাগুর ছড়ার মতো কোনো দূর্ঘটনা ঘটে কিনা। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ কসবা- আখাউড়া থেকে নির্বাচিত এম.পি ও মন্ত্রী আনিসুল হকের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন যেন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।
বিষয়ে চলতি দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছেন। এ ছাড়া তিনি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথেও কথা বলেছেন।
দমকল বাহিনীর লোকজন বেশ কিছু কার্বনডাই-অক্সাইড সিলিন্ডার নিয়ে শেরে বাংলা উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান করছেন।