ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর উচ্চবিদ্যালয় শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির প্রতারনা, জালিয়াতি ও দুর্নীতির কারণে নয়জন এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ার জ্বের ধরে রোববার সকাল ১১ টায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন বিদ্যালয় শিক্ষার্থী সহ অভিভাবকরা। দোষী শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে ওই বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা উপজেলা সদর বাজার থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং মিছিলটি ইউএনও কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানার কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ছাত্র অভিভাবক মুন্নাফ ফকির। সমাবেশে দোষী শিক্ষক ও কার্যকরী ম্যানেজিং কমিটির শাস্তি দাবি করে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা আ.লীগ নেতা আলহাজ মো. কাউছার, মো. আনোয়ার আলী মোল্যা, আনোয়ার হোসেন, জেলা ছাত্রলীগ নেতা জ্যামি হোসেন, স্থানীয় ছাত্রলীঘ নেতা হৃদয় মোল্যা, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আকাশ হোসেন ও মৃদুল হাসান প্রমূখ।
জানা যায়, ওই বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ১১ শিক্ষার্থী এক বিষয়ে ফেল করলে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান সহ আইসিটি শিক্ষক সোহেল রানা মিলে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের বোর্ড চ্যালেঞ্জ করার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়। বোর্ড ওয়েবসাইটে রিপাবলিসট ফলাফলে শিক্ষার্থীদের ফেল দেখানোর পরও ভুয়া অজুহাত দিয়ে ৯ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে বলে নবম শ্রেনীতে ভর্তি করান প্রধান শিক্ষক সহ আইসিটি শিক্ষক। পরবর্তীতে প্রতারণা করে শিক্ষকরা ৯ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন নবম শ্রেণির ভুয়া রেজিস্ট্রেশন কার্ড। ওই ৯ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসএসসি টেষ্ট পরীক্ষায় সবক’টি বিষয়ে পাশ করার পর ফরম ফিলাপের অজুহাত দিয়ে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। গত কদিন কি আগে বোর্ড থেকে ওই বিদ্যালয়ের ৩৬ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র আসলেও ৯ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র আসেনি। ফলে শিক্ষকদের প্রতারনার ফাঁদে পড়ে ঝড়ে পড়েছে উপজেলার ৯ জন শিক্ষার্থী।
বিক্ষোভ ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতারক প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান ও আইসিটি শিক্ষক সোহেল রানার অপকর্ম ফাঁস হওয়ার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছে। প্রতারনার শিকার ৯ জন শিক্ষার্থীর জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। ভুক্তভোগী ছাতত্রছাত্রীর শিক্ষা জীবনে মূল্যবান ৫টি বছর কেড়ে নিয়েছে প্রতারক শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবার অষ্টম শ্রেনীতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই দোষী শিক্ষক সহ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন বক্তারা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, “ দোষী দুই শিক্ষককে অবিলম্বে বরখাস্ত করা হবে এবং তাদের নামে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে”। প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। তবে বিদ্যালয় ম্যানেজংি কমিটির সভাপতি ওবায়দুল বারী দীপু জানান, “ প্রতারনার শিকার শিক্ষার্থীরা ছাড়া বিদ্যালয়ের বাকি সব ছাত্রছাত্রী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে”।