ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় ২০১৮-২০১৯ খ্রি. অর্থ বছরের শিক্ষা মন্ত্রনালয় কর্তৃক বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তি খাতে প্রদত্ত বিশেষ অনুদান মঞ্জুরীর অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকরা আতœসাত করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। মন্ত্রনালয় কর্তৃক শিক্ষা বৃত্তির অর্থ ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদান করার ফলে প্রধান শিক্ষকরা বিভিন্ন ভুয়া শিক্ষার্থীর নামের পাশে নিজেদের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে মোটা অংক হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার লোহারটেক উচ্চ বিদ্যালয়, চর বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও চর চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা শিক্ষা বৃত্তি খাতে প্রদত্ত বিশেষ অনুদান মঞ্জুরীর সিংহভাগ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ খ্রি. অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত উপজেলায় উল্লেখিত তিনটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা খাতে অনুদান মঞ্জুরীর অর্থ গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে প্রদান করা হয়। ২০১৯ ইং সালের প্রথমভাগে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকগন ছাত্রছাত্রীদের অনুদান মঞ্জুরীর জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ ফজলুর রহমানের নিকট আবেদন পাঠান। এসব আবেদনের বিপরীতে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ওই তিনটি বিদ্যালয়ের ৪৫জন গরীব ছাত্রছাত্রীর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার স্বার্থে শিক্ষার্থী প্রতি ৫ হাজার টাকা করে মোট ২লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন এবং বরাদ্দকৃত অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদান করেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকরা দু’একজন প্রকৃত ছাত্রের জন্য মন্ত্রনালয়ে আবেদন করার পর বেশীরভাগ ভুয়া শিক্ষার্থী নামের পাশে নিজেদের মোবাইল নম্বর যোগ করে অনুদান মঞ্জুরীর অর্থ আতœসাত করেছেন। মন্ত্রনালয় কর্তৃত অনুদান প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে উপজেলার লোহারটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের রয়েছে ১৭ জন শিক্ষার্থী, চর বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন ও চর চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬ জন সহ তিনটি বিদ্যালয়ের মোট ৪৫ জন অনুদান প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলার লোহারটেক উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে মন্ত্রনালয়ের মঞ্জুরী পত্রর সাথে স্কুলের প্রকৃত ছাত্র তুলনা করে দেখা যায়, মন্ত্রনালয় কর্তৃক মঞ্জুরী পত্রে উক্ত বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ৬ শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে। এরমধ্যে বিদ্যালয় ছাত্র হাজিরা খাতা বা ভর্তি রেজিষ্ট্রারে নাম রয়েছে মাত্র দু’জন শিক্ষার্থীর। বাকী চারজন শিক্ষার্থীর ভুয়া নামের পাশে একই মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে শিক্ষা বৃত্তির বিশেষ অনুদান মঞ্জুরীর অর্থ আতœসাত করা হয়েছে।
এ ব্যপারে উক্ত বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জায়েদুর রহমান খানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, “ স্থানীয় কিছু লোক মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট সহকারী সচিব মোঃ ফজলুর রহমানের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে এবং এ নিয়ে অনেক কিছু হচ্ছে। তিনি আরও জানান, বরাদ্দ পত্রে বিভিন্ন শিক্ষার্থীর নামের পাশে একই মোবাইল নম্বর থাকলেও আমরা অতিরিক্ত অনুদান মঞ্জুরীর অর্থ পাই নাই”। তবে পার্শ্ববতী আরেক প্রধান শিক্ষক চর বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আঃ মালেক জানান, “ আমাদের দেওয়া একই মোবাইল নম্বরে ৩/৪জন শিক্ষার্থীর বিশেষ অনুদান মঞ্জুরীর অর্থ এসেছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিলনা বলে আমরা বিভিন্ন ছাত্রর অনুদানের অর্থ প্রাপ্তীর জন্য একই মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছি”।