রাজশাহীর বাঘায় যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মামা নাজমুল হোসেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) বিকেলে স্থানীয় এম আর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে প্রায় ৫ হাজারের বেশি জনগনের সমম্বয়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ আসামীদের গ্রেপ্তার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভটি নিহত নাজমুলের বাড়ি বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সুলতানপুর থেকে ওই স্কুল মাঠে সমবতে হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন, বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি, লালপুর উপজেলার দুড়দুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম, বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু। আরও বক্তব্য দেন নিহত নাজমুল হোসেনের পিতা আজিজুর রহমান, চাচা আবদুল মালেক, খানপুর জে.পি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, মনিহারপুর গ্রামের আলী আকবর প্রমুখ। এ সময় বক্তারা নিহত নাজমুলের হত্যাকারী ও হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
পরে সেখানে উপস্থিত হন বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা এবং বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম। তারা বিক্ষোভকারী সহ¯্রাধীক জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের আশ^স্ত করা হচ্ছে যে, নাজমুল হত্যার অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান আসামি সুমন আলীসহ বাকিদের ধরতে কয়েক দফা অভিযানও চালানো হয়েছে। এ সময় রাতেই ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে আভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে খুব দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় বাঘা উপজেলার সুলতান গ্রামে নাজমুল হোসেনকে (৩০) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে বখাটেরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুমনকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতেই বাদী হয়ে বাঘা থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত নাজমুল হোসেনের বাবা অজিজুর রহমান। মামলার পরপরই এ ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতারও করে।
তবে ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও মূল আসামি এখনও ধরা ছোয়াঁর বাইরে থাকায় ক্ষোভ জন্মেছে এলাকাবাসীর মনে। এরই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরাও। এলাকাবাসীর দাবি নাজমুল হত্যার সাথে জড়িত সকল আসামীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতসহ দৃষ্টান্তমূল শাস্তি প্রদান করা। এদিকে আগামি শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার খানপুর জে.পি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করবেন বলে জানা গেছে।