বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা বসেছিল শেরপুরে। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে শেরপুর পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের নবীনগর মহল্লার ফসলি জমির মাঠে বসেছিল এ মেলা। স্থানীয় নবীনগর এলাকাবাসী প্রায় শত বছর যাবত এ মেলার আয়োজন করে আসছেন।
মেলায় বিভিন্ন পিঠা, মিষ্টি, সাজ, মুখরোচক খাবারসহ বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মজাদার খাবারের পসড়া বসেছিল । এছাড়া শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মাটির তৈরী বিভিন্ন আসবাবপত্র, মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি-মালার দোকানের পসড়াও সাজিয়ে বসে দোকানীরা। বেচা বিক্রিও চলে বেশ। মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় জমান। এদিকে মেলার আশাপশে স্থানীয় গ্রামবাসীর ঘরে ঘরে চলে পিঠা-পায়েশ খাওয়ার উৎসব। এ উৎবকে ঘিরে প্রতি বাড়িতেই দুর-দুরান্তের আত্মিয়রা ছুটে আসেন পিঠা খেতে এবং মেলা দেখতে।
মেলায় গাঙ্গি খেলা (কুস্তি) ও সাইকেল রেস প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিযোগীরা আসেন। এবার ঘোড় দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে আসেন ২০ জন ঘোড় সোয়ার।
খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন শেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলার মো. নজরুল ইসলাম। এসময় আয়োজকদের মধ্যে জয়েন উদ্দিন মাহমুদ জয়, জেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, গোলাম মোস্তাফা, সোহেল রানা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুর জেলা শহরের অদুরে এবং পৌর এলাকার মধ্যে এ মেলার আয়োজন করা হলেও কোন রকম প্রচারণা চালানো ছাড়াই মেলায় উপচে পড়া ভিড় পড়ে যায়। কত বছর পূর্বে এ মেলার প্রচলন হয়েছিল তা কেউ সঠিক করে বলতে না পারলেও প্রায় এক শ বছরের উপরে বলে মনে করেন স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ ও গ্রামবাসী ।
এ মেলা মূলত ৩০ পৌষ ১৩ জানুয়ারী অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তির মেলা হলেও এবার মেলার স্থানে কৃষকরা তাদের বোরো আবাদের মাঠ তৈরীর প্রস্তুতির জন্য মেলার তারিখ দুই দিন আগে নির্ধারণ করা হয়। মেলায় প্রতিবছর অন্যতম আকর্ষণ ঘোর দৌড়ের পাশপাশি গাঙ্গি খেলা ও সাইকেল রেস হলেও এবার র্যাফেল ড্র ও মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিনদিন এ মেলার আকর্ষণ ও লোক সমাগমও বাড়ছে বলে আয়োজকরা জানান ।