‘আগামী মে মাস থেকে আমের রাজধানীখ্যাত রাজশাহীর গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হবে। তবে এবার শতভাগ রাসায়নিকমুক্ত আম বাজারজাত করণের লক্ষ্যে কঠোর নজরদারি করবে জেলা প্রশাসন। আমরা চাই, এই মুজিব জন্মশতবর্ষ থেকে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহীর আম যেন শতভাগ নিরাপদে খাওয়া যায়। এই মুজিব জন্মশতবর্ষে সকলকে মনে মনে শপথ নিতে হবে, এখন থেকে রাজশাহীর আম শতভাগ রাসায়নিকমুক্ত করণের লক্ষ্যে এক যোগে সকলকে কাজ করতে হবে। আর এখন থেকে এ ব্যাপারে নূন্যতম আপোশ করার কারো কোন সুযোগ থাকবে না।’ মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা বলেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হামিদুল হক।
ডিসি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের ঘোষিত মুজিববর্ষ শুরু হচ্ছে চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে। উদযাপন করা হবে আগামী বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত। আর এই মুজিববর্ষ থেকে নিরাপদ খাদ্য খাওয়ার লক্ষ্যে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আম নামানোর সময়সীমা বেঁধে দেয়ার কারণে এমনিতেই রাজশাহীর আমে কোনো ধরণের রাসায়নিক প্রয়োগের সুযোগ পান না চাষিরা। তারপরেও মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে এ বিষয়টি আরও ভালোভাবে নজরে রাখা হবে।
শুধু মুজিব বর্ষে নাকি এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘পূর্বে থেকেই এ প্রক্রিয়া চলমান। তবে বিশেষ এই বছরকে ঘিরে এখন থেকে আমের গুনগত সঠিক মান বজায় রাখতে কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে শতভাগ নিশ্চিত করা হবে। ফলে বলতেই পারি, মুজিববর্ষ থেকে আমের রাজধানীখ্যাত রাজশাহীর বিষমুক্ত আম হবে জাতির জন্য উপহার।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, মুজিববর্ষে সরকারি সব দপ্তরের সেবা হবে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিয়ে জনমনে একটা নেতিবাচক ভাবনা রয়েছে। সে জন্য মুজিববর্ষে প্রতিটি উপজেলায় ভূমি মেলার আয়োজন করা হবে। সেখানে সবচেয়ে কম সময়ে সেবা পাবেন মানুষ। এভাবে প্রতিটি দপ্তরেরই সেবার মান বাড়ানো হবে।
এর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক রাজশাহী সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সমগ্র জেলায় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জেলার ৯ উপজেলায় ৯টি ক্ষণগণনা যন্ত্র বসানো হয়েছে।
এছাড়া সরকারি উদ্যোগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নগর ভবন এবং নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে দুটি ক্ষণগণনা যন্ত্র বসানো হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও একটি ক্ষণগণনা যন্ত্র বসিয়েছে। এছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে একটি বুকলেট প্রকাশ করবে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। আর নিñিদ্র নিরাপত্তায় মুজিববর্ষে বছরজুড়েই থাকবে নানা অনুষ্ঠান। প্রেস ব্রিফিংকালে অন্যদের মধ্যে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হক, মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুর রশিদ, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সচিব আবু হায়াত মো. রহমাতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।