উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পেঁয়াজ আবাদে খ্যাত পাবনার সুজানগরে পেঁয়াজ আবাদের ধুম পড়েছে। পৌষের হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে চলছে পেঁয়াজ আবাদ। উপজেলার বড় ও প্রান্তিক থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের কৃষক এখন পেঁয়াজ আবাদে ব্যস্ত।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৫‘শ হেক্টর জমিতে। তবে গত ৩/৪মাস পেঁয়াজের বাজার স্মরণকালের সব চেয়ে ভাল হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমপক্ষে ১হাজার হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার দুলাই গ্রামের আদর্শ কৃষক গোলাম রসূল জানান, গত বছর যে সকল কৃষক ১০বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছিল এবার সে কমপক্ষে ১৫বিঘা জমিতে আবাদ করছেন। সেকারণে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ময়নুল হক সরকার জানান, চলতি পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে উপজেলার অধিকাংশ মাঠে পেঁয়াজ আবাদ শুরু হয়েছে। আবাদ কার্যক্রম চলবে মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। ইতিমধ্যে স্থানীয় কৃষি শ্রমিকের পাশা-পাশি রাজবাড়ি, ফরিদপুর, সিরাগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল এবং মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার, হাজার কৃষি শ্রমিক সুজানগরে এসে পেঁয়াজ রোপণ করছেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও লেখা-পড়ার ফাঁকে অন্যের জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে প্রতিদিন ৫থেকে ৬‘শ টাকা উপার্জন করছে। বর্তমানে উপজেলার পেঁয়াজ চাষীদের বাড়িতে বাড়িতে চলছে নবান্ন উৎসবের ন্যায় পেঁয়াজ আবাদ উৎসব। বড় ও প্রান্তিক থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের পেঁয়াজ চাষীরা চলতি এ পেঁয়াজ আবাদের মৌসুমে তাদের বাড়িতে শীতকালীন চিতই ও ভাপা পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের ভালমন্দ খাবার আয়োজন করেন। এ সব খাবার গার্হস্থ্যদের পাশাপাশি তাদের আত্মীয়স্বজন ও পেঁয়াজ শ্রমিকরা আয়েশ করে খেয়ে থাকেন। উপজেলার দুর্গাাপুর গ্রামের বড় পেঁয়াজ চাষী কামরুজ্জামান বলেন, এ উপজেলার একজন প্রান্তিক চাষীও ১০/১৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেন। সেকারণে এ সময় গোটা উপজেলায় নবান্ন উৎসবের মতো পেঁয়াজ আবাদ উৎসব দেখা দেয়।