বগুড়ার শেরপুরে ভবানীপুর বাজার এলাকায় গৃহকর্তাকে হত্যা করে গরু-ছাগল ডাকাতির ঘটনার ৫ মাস পরে ঘটনার সাথে জরিত আন্ত:জেলা ডাকাত দলের অন্যতম ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে শেরপুর থানা পুলিশ।
উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এক অভিযানে ৩০ ডিসেম্বর (সোমবার) রাতে ডাকাত দলের সদস্য ও হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী আজদার রহমানও রেজাউল করিম কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত ডাকাত আজদার রহমান (৫২) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের মৃত কমেজ উদ্দিনে ছেলে এবং রেজাউল করিম (৩৭) নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রনসিবাড়ী গ্রামের মৃত জাম্মাতের ছেলে। বর্তমানে রেজাউল নাটোরের বাগাতিপাড়ার গালিমপুর গ্রামে বসবাস করছে।
এ বিষয়ে গতকাল ৩১ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে শেরপুর থানায় এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) গাজিউর রহমান আনুষ্ঠানিক ভবে এ তথ্য জানান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী এসময় জানান, ধুনট উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের হটিয়ারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল সামাদ প্রামানিকের ছেলে শাহজাহান আলী শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে কয়েক বছর ধরে অলির উদ্দিনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল জীবন জীবিকার জন্য এঁড়ে গরু দিয়ে প্রজনন ব্যবসা করছিল।
এর এক পর্যায়ে ২০১৯ইং বিদায়ী বছরের ২৬ জুলাই আন্ত:জেলা ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য ও হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী আজদার ও রেজাউল করিম সহ প্রায় ৮/৯ জন সশস্ত্র আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য একটি ট্রাক নিয়ে এসে শাজাহান আলীর বাড়িতে ওই দিন রাত ২টার দিকে ৩টি গরু ও ১টি ছাগল ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শাহজাহান আলী তাদেরকে বাধা দিলে ডাকাতদল তার দুই হাতের বাহুতে ছুরিকাঘাত করার এক পর্যায়ে গলায় গামছা পেছিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও গুরুতর আহত করে ৩টি মূল্যবান গরু ও একটি ছাগল(পাঠা) নিয়ে যায়।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২৮ জুলাই শেরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বিভিন্ন প্রযুক্তি ও সোর্স ব্যবহার করে ডাকাত দলের অবস্থান নিশ্চিত করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(সার্বিক) হুমায়ুন কবীর, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমান গনিসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর সোমবার রাত ২ টার দিকে নাটোরের বনপাড়া এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালায় । অভিযানের এক পর্যায়ে এলাকা থেকে কুখ্যাত ডাকাত আজদার আলী ও তেবাড়ীয়া হাট এলাকা থেকে রেজাউল করিমকে আটক করে ।
।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বিকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যা ও ডাকাতির কথা স্বিকার করেছে। আজদারের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার সিংড়া থানা ও রাজশাহীর বাঘা থানায় হত্যা সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা ১৬ বছর জেল খেটে ২০১৭ সালে ছাড়া পায়। ডাকাতি মামলায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে প্রেসব্রিফিংয়ে নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী । শেষ খবর পর্যন্ত , গ্রেফতারকৃত আসামীদের মঙ্গলবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।