এসা মিলি নাড়ীর টানে, প্রাণের বন্ধনে- এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে ফরিদপুরের চর টেপাখোলা উচ্চবিদ্যালয়ের ৫০বছর পূর্তি উপলক্ষে সূবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপিত হলো। দিনব্যাপী নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হাজারো প্রাণের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মধ্যাহ্ন ভোজ, র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণের মধ্যে দিয়ে শুক্রবার ফরিদপুরে চর টেপাখোলা উচ্চবিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালিত পালিত হয়।
প্রচন্ড শীত এবং সাথে টিপ টিপ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সকাল ১০টার দিকে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের অনুষ্ঠানিকতা। শোভাযাত্রাটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে টেপাখোলা এলাকা, সোহরাওয়ার্দী লেক পাড় ঘুরে আবার বিদ্যালয় চত্ত্বরে ফিলে আসে। পরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জাতীয় সংগীতের সাথে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা।
প্রসঙ্গত ১৯৬৮ সালে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের পালডাঙ্গীতে এ বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। কিন্তু ২০০৩ সালে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের শিকার হয়ে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। পরে এ বিদ্যালয়টি শহরের টেপাখোলা এলাকায় সোহরাওয়ার্দী সরবরের পূর্বপাশে জেলা পরিষদের জায়গায় স্থনান্তর করা হয়।
এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষক শিক্ষকতা করছেন। ছাত্র ও ছাত্রী মিলে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে জন ৬৫০ জন। সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মিলে নাম নিবন্ধন করেছে এক হাজার ৭০০ জন।
আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয় দুপুর ১২টার দিকে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
জেলা প্রশাসক বলেন, এ বিদ্যালয়টি ইতোমধ্যে ফরিদপুর শহরে একটি স্থান করে নিয়েছে। এ বিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করে এটিই এ বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের মাদক ও জঙ্গীবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। এ দুটি বিষয় দেশে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি ১৮ বছর হওয়ার আগে ছেলে-মেয়েদের হাতে মুঠোফোন তুলে না দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পলিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাদিকুজ্জামান পাল। আলোচনায় অংশ নেন জেলা আ.লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত এ অনুষ্ঠানে প্রথান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থি থাকার কথা ছিল যথাক্রমে ফরিদপুর-৩ আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও হা-মীম গ্রুপের স্বত্ত্বাধীকারী বিশিষ্ট শিল্পপতি এ. কে আজাদের। সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে তাদের অনুষ্ঠানস্থলে আসার কথা ছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার জন্য তারা এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন নি।
বিকেলে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ফরিদপুর শহর ও ঢাকার শিল্পীরা গান ও নাচ পরিবেশন করেন। সবশেষে র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।