রাজশাহীর বাঘার সড়ক দূর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জনসহ পাঁচজনের মাগফেরাত কামনায় মসজিদে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর সরেরহাট কেন্দ্রীয় মসজিদ, বামনডাঙ্গা মসজিদ, সরেরহাট পূর্বপাড়া মসজিদ ও চকএনায়েরপুর মসজিদে পৃথকভাবে এ মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদে নিজ নিজ এলাকার মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্কুল শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে জান্নাতুল আক্তারের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে মাহবুবা আক্তার রেশমীর শুক্রবার বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আমার পরিবারের নিহতের স্বরনে স্থানীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে।
সরেরহাট গ্রামের নিহতদের প্রতিবেশি মারুফ মন্ডল বলেন, বিয়ের দাওয়াত দিয়ে ফেরার পথে অনাকাংক্ষিত এক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জনসহ পাঁচজন নিহত হয়। বুধবার বেলা ১১টায় বাঘা উপজেলার গড়গড়ি-দাদপুর (সরেরহাট) উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা সম্পন্ন করে দাদপুর সরেরহাট কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মাহবুবা আক্তার রেশমীর দুলাভাই এনামুল হোসেন মিন্টু বলেন, নিহতের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ করা হয়েছে। তবে বিয়ের পূর্বের দিন ধার্য অনুযায়ী শোকের মধ্যেও উভয়ের সম্মতিতে বর পক্ষের ৪-৫ জন লোক এসে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি জানান, মরহুম মেজবাউল আলম মাসুমের পরিবারে একমাত্র বাবা ছাড়া কেউ রইলো না। ফলে পরিবারটি নিশ্ব হয়ে পড়েছে। তার বড় বোন জান্নাতুল আক্তারের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট বোন মাহবুবা আক্তার রেশমীর শুক্রবার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে সিএনজি চালক জালাল উদ্দীনের স্ত্রী রুনা লায়লা রানু ও ৫ম শ্রেণির ছাত্র রান্টু ও বৃদ্ধ মা সানোয়ারা বেগম রয়েছে। এ পরিবারের উপার্জনকারী ব্যাক্তি ছিলেন একমাত্র জালাল উদ্দীন
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের ভেড়ামারা পাওয়ার হাউজের যাত্রী ছাউনির সামনে মঙ্গলবার বিকালে সাড়ে ৩টায় দিকে ট্রাক-সিএনজির সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জনসহ পাঁচজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন সিএনজিচালক বাঘা উপজেলার সরেরঘাট গ্রামের ছবির মোল্লার ছেলে জালাল উদ্দিন (৪০), একই গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবদুস সালামের ছেলে মেজবাউল আলম মাসুম (৩৫), তার স্ত্রী রুনা খাতুন (২৬), ছেলে ঈব্রাহীম হোসেন রুজদী (৭ মাস) ও মেজবাউল আলম মাসুমের মা মাহমুদা বেগম (৫৪)। বুধবার বেলা ১১টায় বাঘা উপজেলার গড়গড়ি-দাদপুর (সরেরহাট) উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা সম্পন্ন করা হয়েছে। পরে দাদপুর সরেরহাট কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ঘটনার ৩দিন পর শুক্রবার সরেরহাট এলাকার ৪টি মসজিদের মরহুদের নামে মিলাদ মাহফিল করা হয়েছে।