ইউনিয়ন পরিষদ হলো গ্রামের সাধারণ মানুষের সবচেয়ে কাছের ও সবচেয়ে প্রয়োজনীয় একটি প্রতিষ্ঠান। ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, নারী-পুরুষ সকল ধরণের মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ সেবা গ্রহণে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয়। এজন্য বলা হয়ে থাকে ইউনিয়ন পরিষদ হলো স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি সংগঠন। সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে তাঁদের পছন্দের মানুষকে ইউনিয়ন পরিষদে বসার সুযোগ করে দেয় বলে এই প্রতিষ্ঠানটিতে মানুষ আনন্দ নিয়ে ও নির্ভয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দিন দিন নজরকাড়া সৌন্দর্যে রুপান্তরিত হলেও মানুষের সবচেয়ে কাছের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্সে তৈরী হলেও সেখানে বসার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, বসার পরিবেশ, দৃষ্টিনন্দনতা কোনটাই সন্তোষজনক নয়। যে সকল ইউনিয়ন পরিষদে এখনও কমপ্লেক্স তৈরী হয়নি সেগুলোর অবস্থা আরো খারাপ। মাথায় ছাঁদ ধসে পড়ার ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে পরিষদের স্টাফ ও জনপ্রতিনিধিরা।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় রয়েছে ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ। এর মধ্যে ০৬টি ইউনিয়ন পরিষদে ইতোমধ্যে কমপ্লেক্স হয়েছে। এগুলো হলো ঘোষনগর, আমাইড়, শিহাড়া, নির্মইল, আকবরপুর, কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন। এখনও কমপ্লেক্সে হয়নি পাটিচরা, নজিপুর, পত্নীতলা, দিবর ও মাটিন্দর ইউনিয়নে। এর মধ্যে মাটিন্দর, দিবর ও পত্নীতলা এই ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মাথায় পলেস্তারা খসে পড়ে দূর্ঘটনার আতঙ্ক মাথায় নিয়ে কাজ করছেন জনপ্রতিনিধি, সচিব ও ডিজিটাল সেন্টারের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে কয়েকজনের গায়ে পলেস্তারা খসে পড়ায় এই আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিষদের জন্য উপযুক্ত জায়গা না পাওয়ার জন্য এ সকল ইউনিয়ন পরিষদে কমপ্লেক্স নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে মাটিন্দর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আলম রুবেল জানান, বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদটি হাটের জায়গার উপর আছে। জমি না পাওয়ায় কমপ্লেক্স নির্মাণ আটকে আছে। দিবর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ ও পত্নীতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা শাহ চৌধুরী জানান পরিষদের কমপ্লেক্স নির্মাণে জায়গা না পাওয়ায় ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে এলাকাবাসীকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাঁরা উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী সৈকত দাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ইতোমধ্যে সকল ইউনিয়নে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। জায়গা পেলেই সকল ইউনিয়ন পরিষদে কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন সরকারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, উপযুক্ত জায়গা পেলেই ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।