প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা যাচাই-বাছাই ও সংশোধনের পর পুনবায় প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এরইমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও তিনি তাদের যাচাই বাছাই করে যেন কোনো ভুলভ্্রান্তি না থাকে, আর থাকলে তা সংশোধন করে প্রকাশের নির্দেশনা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যেহেতু বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে, যাচাই বাছাইয়ের অঙ্গীকার করেছে, সেহেতু এ নিয়ে আর কোনো ‘প্রশ্ন থাকার কথা নয়।’
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের সরকারের কাছে বিভিন্ন মহল থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা প্রকাশের দাবি করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন। কিন্তু প্রথম দফায় এই তালিকা প্রকাশের পর বরিশাল, বরগুনা, রাজশাহী, বগুড়া ও ঝালকাঠি জেলার মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও একাত্তরের আওয়ামী লীগ নেতাদের কয়েকজনের নাম দেখে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধারা। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ কর্মসূচিও দেয়া হয়। দ্রুত এসব ভুল সংশোধন করে নতুন তালিকা প্রকাশসহ দায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, একাত্তরে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন না, এমন কারো নাম সরকারের প্রকাশিত স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় এসে থাকলে তা বাদ দেয়া হবে। কিন্তু ভুলের দায় অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, ‘এই তালিকাটি ১৯৭১ সালে করা। আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংগ্রহ করেছি।’
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা সরবরাহ করার সময় যেসব ব্যক্তির নাম-মামলা প্রত্যাহার হয়েছিল, সে বিষয়ে ‘নোট’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে ওই সব ‘নোট’ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ওই নোটগুলো বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আবারো একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী তালিকা প্রকাশ করবে বলে আশা করেছেন তিনি।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ম-লীর সদস্য কাজী জাফরউল্যা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া।
উল্লেখ্য, রোববার (১৫ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ৭৮৯ জন ‘স্বাধীনতাবিরোধীর’ ওই তালিকা প্রকাশ করে।