রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) রোগীদের জন্য পথ্য সরবরাহে পছন্দের ঠিকাদার নির্বাচিত করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আবারও মামলা হয়েছে। মামলায় রামেক হাসপাতালের পরিচালক ও দরপত্র কমিটির সদস্যদের আসামি করা হয়েছে। নাটোরের ঠিকাদার এমদাদুল হক বাদী হয়ে রোববার রাজশাহী মহানগর যুগ্ম জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। এমদাদুল হকের আবেদনটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক জয়ন্তী রানী দাস আগামী ১৯ জানুয়ারি মামলাটি শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
মামলায় ঠিকাদার এমদাদুল হক অভিযোগ করেছেন, মোট আটটি গ্রুপের মধ্যে চারটি গ্রুপের দরপত্র প্রকাশ্যে খোলা হলেও অন্য চারটি গ্রুপের দরপত্র খোলা হয় গোপনে। গোপনে মাছ, দুধ, স্টেশনারি ও বিবিধ কাজের দরপত্র খোলা হয়। যারা কাজ পেয়েছেন, তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কে কত দর দিয়েছিলেন, তা জানানো হয়নি।
দরপত্র ডকুমেন্টে দেখা যায়, রেশন গ্রুপে শাহাবুদ্দিন হলুদের দর দেন প্রতিকেজি ৫৮ টাকা। যে কাজটি ১৭০ টাকা দরদাতাকে না দিয়ে ২২৫ টাকা দর দেওয়া আজাদ আলীকে কাজটি দেওয়া হয়েছে। আর জিরা প্রতিকেজি ১২০ টাকা দর দেন শাহাবুদ্দিন। কিন্তু তিনি পছন্দের ঠিকাদার হওয়ায় সরবরাহের কাগজে তা কয়েকগুন বাড়িয়ে তাকে প্রতিকেজিতে দর দেওয়া হয়েছে ৩৫০ টাকায়।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের জন্য মোট আটটি গ্রুপে ৩৮ আইটেমের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদাররা এতে অংশ নিয়ে সরবরাহ করতে দরপত্র জমা দেন। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর দরপত্র বাক্স খোলা হয়। আর গত ২৬ অক্টোবর ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে কার্যাদেশে হাতে পাওয়ার পরই অনিয়মগুলো ধরা পড়ে। যাতে সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারকে কাজ না দিয়ে উচ্চ দরদাতা পছন্দের ঠিকাদারকে সেগুলো কাজ দেওয়া হয়েছে।
এমদাদুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়াহিয়া জানান, ‘অনিয়ম করে সরবরাহকারী নিয়োগ করায় একদিকে সরকারের বিপুল অর্থ লোকসান হবে। অন্যদিকে তার মক্কেল ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ কারণে ন্যায় বিচারের জন্য আদালতের দারস্থ হয়েছেন। এর আগে একই ঘটনায় মো. সুমন ও পাবনার আরজেডএস এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার রাশেদুজ্জামান আদালতে আলাদা দু’টি মামলা করেছেন। আগামী নতুন বছরের জানুয়ারিতে ওই মামগুলোরও শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।’
এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, ‘মামলা হলে তারা আদালতেই বিষয়টি মোকাবিলা করবেন।