লবণ গুজব প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের পদ ছেড়ে দিতে হলো নজিপুর নতুনহাট বণিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবেক বিজিবি সদস্য ও মেসার্স জননী এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. জাহাঙ্গীর আলমকে। এ ঘটনায় কমিটির অপর সদস্য মো. আকতার হোসেনসহ নৈশপ্রহরী নেমাই ও রাজীব পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় নজিপুর বণিক কমিটির সদস্যদের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় ১৯৯৯ সালে নজিপুর নতুনহাট বণিক কমিটি গঠিত হয়। ২০১৫ সালে জাহাঙ্গীর আলম কমিটির হলে ধরেন এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন এবং দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। গত ১৯ নভেম্বর সারাদেশে লবণ নিয়ে গুজব শুরু হলে ২০ নভেম্বর বিকেলে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন সরকার নজিপুর নতুনহাট বণিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে মোবাইলে জানান, ব্যবসায়ীরা যাতে লবণের অতিরিক্ত মুল্য না নিতে পারে সে বিষয়ে তাদের সচেতন করতে। নির্বাহী অফিসারের অনুরোধে মো. জাহাঙ্গীর আলম ২১ নভেম্বর সকাল ৯টায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হোন এবং গুজবে কান না দিয়ে সঠিক দামে লবণ বিক্রি করার পরামর্শ প্রদান করেন। এ সময় কমিটির সভাপতি মোস্তফা কিবরিয়া ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। লবণ ইস্যু নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের মতবিনিময় করার বিষয়টি জানতে পেরে সভাপতি মোস্তফা কিবরিয়া অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ ধরণের সভা ডাকার এখতিয়ার সাধারণ সম্পাদক রাখে কিনা সে নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন। এ নিয়ে কমিটির সভাপতি মোাস্তফা কিবরিয়ার সাথে সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিলে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ২২ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। এ ঘটনায় কমিটির অন্যতম সদস্য মো. আকতার হোসেন এবং নেমাই ও রাজীব নামে অপর ২জন নৈশ প্রহরীও পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত প্রায় ৫বছর ধরে আমি প্রাণপণ চেষ্টা করে কমিটির কার্যক্রম চলমান রেখেছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেছে তাদের অনেকের মানসিকতার সাথে আমার পরিকল্পনা মিলছে না। সর্বশেষ স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে গিয়ে আমি বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে আমি লবণ গুজব প্রতিরোধে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করলেও সভাপতি বিষয়টি ভালোভাবে গ্রহণ করেননি এবং আমার সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করায় নিজ সম্মান রক্ষার্থে পদত্যাগ করেছি।
এ বিষয়ে নজিপুর নতুনহাট বণিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কমিটির সাধারণ সম্পাদক ব্যস্ততার কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।