স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা সদরসহ মফস্বল বাজারে দিনদিন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সারাদেশের ন্যায় চলতি নভেম্বর মাসে পিয়াজ,চাল,তেল,সবজির দাম বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি পিয়াজের দর দেশের অন্যান্য স্থানে কমে আসলেও এ উপজেলার বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে দেশী পিয়াজ ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পিয়াজ ২০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার হঠাৎ লবনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্বিগুন দামে বিক্রি করেছে ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ও মাইকিংয়ের পর লবনের দাম স্বাভাবিক হয়। রহনপুর পুরাতন বাজারের কয়েকজন পাইকারী মুদি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও অবৈধ মজুদ করে পণ্য সামগ্রীর দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
রহনপুর স্টেশন ও পুরাতন বাজার সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বাজারে মালামালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও বেশী দামে পণ্য সামগ্রী কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। রহনপুর স্টেশন বাজারের সবজি আড়ৎদার অমিতাভ ইসলাম টুটুল জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই আড়তে সবজির আমদানি কম থাকায় খুচরা পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্নিঝড় বুলবুলের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গ (খুলনা,যশোর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ) থেকে আসা সবজির সরবরাহ কম থাকায় এ মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তিনি আরও জানান,স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সবজি রাজধানী ঢাকায় চলে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে বেগুন প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা,ফুলকপি ৬০-৮০ টাকা,মূলা ২০-৪০ টাকা,আগাম জাতের টমেটো ৮০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০-১০০ টাকা, আলু ২৫-৩০ টাকা,দেশী আলু ৪০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পামওয়েল প্রতিকেজি ৭২ টাকা ও সয়াবিন তেল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে রহনপুরের পাইকারী তেল ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান জানান, বর্তমানে প্রতিকেজি পামওয়েল ৬৭ টাকা ও সয়াবিন তেল ৮৩ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
রহনপুর স্টেশন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বাজারে মোটা চাল ৩০-৩৫ টাকা,চিকন চাউল ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ খুচরা বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গ উপজেলার অন্যতম বৃহৎ চাল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নজরুল অটো রাইস মিলের ব্যবস্থাপণা পরিচালক খাদেমুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাজারে নতুন ধান সেভাবে না আসায় পুরাতন ধানের দাম কিছুটা বেশি রয়েছে। তবে তারা ৫০ কেজির ১ বস্তা মোটা চাউল ১৪’শ টাকা, চিকন চাউল ২২’শ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করা হচ্ছে। পরিবহণ ধর্মঘটের অজুহাতে খুচরা ব্যবসায়ীরা চাউলের দাম বৃদ্ধি করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
রহনপুর শিল্প ও বণিক ম,িমতির সভাপতি সৈয়দ ফারুক হোসেন জানান, এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মূল্য সহনীয় রাখতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান,উপজেলা সদর রহনপুরের দু’ই বণিক সমিতির মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। গুজবের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কেউ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।