বগুড়ার শিবগঞ্জে ভরন পোষন দাবী করায় শিল্পী বেগম (৪৭)নামের এক নারীকে প্রকাশ্য খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চাল্যর সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষেতের ফুলকপি নষ্টের অভিযোগে তাকে শনিবার বিকালে বেঁধে রেখে প্রকাশ্য নির্যাতন চালানো হয়।
শিবগঞ্জের অনন্তবালা গ্রামের শহিদুলের ছেলে রাফি ইসলাম রাফি ও তার লোকজন প্রকাশ্য জনসম্মুখে তাকে বাঁশের খুঁটির সাথে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে।
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের অনন্তবালা গ্রামের শিল্পী বেগমকে শুক্রবার সকালে জমিতে কপির চারা নষ্ট করার অভিযোগ একই গ্রামের রাফি ও তার লোকজন বাঁশের খুঁটির সাথে হাত পিছমোড়া ও পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়।
এসময় স্থানীয়দের মধ্য ক্ষোভ দেখা দিলে তাকে চালাকে করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। থানা পুলিশ ওই নারীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভ্রাম্যমাণ আদালতে নিয়ে যায়। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ওই নারীকেই বাদী করে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা নিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেন। পরে রাতে পুলিশ মামলাটি রাতেই নথি ভুক্ত করে।
সরেজমিনে ঘটনার অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগুড়া সদরের পলাশবাড়ি এলাকার শিল্পী বেগম নামের ওই নারী একজন নির্মাণ শ্রমিক। ইতি পূর্বে প্রথম পক্ষের সাথে ছাড়া ছাড়ি হয় তার। পরে ৮/৯ মাস পূর্বে শিবগঞ্জ উপজেলার অনন্তবালা গ্রামের শহিদুলের ছেলে রাফি ইসলাম তাকে বিয়ে করেন। বেশ কিছুদিন তারা ঠেঙ্গামারা এলাকায় বস্ববাস করে।কিন্তু হঠাৎ করেই তার স্বামী রাফি সেখান থেকে চলে আসে।
এদিকে গত প্রায় এক দেড় মাসেও রাফি তার স্ত্রী শিল্পীর কোন প্রকার খোঁজখবর না করা এবং ভরন পোষন না দেয়ায় শিল্পী বেগম শুক্রবার সকালে শিবগঞ্জের অনন্তবালা গ্রামে স্বামী রাফির বাড়িতে যায়। এতে করে স্বামী ও তার বাড়ীর লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। পরে স্বামী রাফি ও তার পরিবারের লোকজন স্থানীয় একটি ফুলকপি ক্ষেতের মধ্যে তাকে প্রকাশ্য বাঁশের সাথে দঁড়ি দিয়ে হাত পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। এদিকে বিষয়টি জানা জানির পর গোটা এলাকাবাসীর মধ্য তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ওই নির্যাতিতা নারীকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে থানায় পাঠানো হয়।
এব্যপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহা ঃ আলমগীর হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনার বিষয়টি বুঝতে পেরেই তিনি রাতেই ওই নির্যাতিতাকে বাদী করে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেয়ার জন্য শিবগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
এদিকে রোববার সকালে এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ সংস্থা এফএনএস’কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নথি ভুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে ঘটনার সত্যতা জানার পর থেকে গোটা এলাকাবাসীর মধ্য তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছে। তারা অবিলম্বে ঘটনার সাথে জরিতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন।