বৃদ্ধ শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে ভরণ-পোষনের খরচ না দেয়া, খাবার না দেয়া, ঘর থেকে নামিয়ে দেয়া ও মারধর করার ঘটনায় জেলার আগৈলঝাড়ায় এক গৃহবধুকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। বুধবার সকালে দন্ডপ্রাপ্তকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত হলো আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের বাসিন্দা খোকন বৈরাগীর স্ত্রী মনিকা রানী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, দন্ডপ্রাাপ্ত মনিকা তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ির ভরণ-পোষনের খরচ না দিয়ে আলাদা খাবারের ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া মনিকার বিরুদ্ধে তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে ঘর থেকে নামিয়ে দেয়া এবং শ্বশুরকে মারধর করার অভিযাগ রয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর তার শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মনিকাকে অফিসে আসতে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি আসেননি। এ কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সমাজসেবা কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নিয়ে ভবসিন্ধুর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মনিকা কোনোভাবেই তার শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে মেনে নিতে পারবেনা বলে জানিয়ে দেয়। পরে মনিকাকে রাতেই আটক করে তার কার্যালয়ে আনার পর সে অকপটে সবকিঠু স্বীকার করেন। পরে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়।
অপরদিকে মনিকার বৃদ্ধ শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের সাথে কোনও ধরনের খারাপ ব্যবহার কিংবা ঘর থেকে নামিয়ে দিতে চাইলে প্রশাসনকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। আদালতের বিচারক বিপুল চন্দ্র দাস তার দেয়া রায় সম্পর্কে বলেন, বৃদ্ধ শ্বশুর-শ্বাশুড়ী অথবা বাবা-মাকে খাবার না দেয়া ও তাদের মানসিক এবং শারিরীক নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই রায়টি অনুকরনীয় দৃস্টান্ত হয়ে থাকবে।
মনিকার শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগী জানান, তাদের খাবার দেওয়া বন্ধ করে গত ছয় মাস ধরে তাকে ও তার স্ত্রী বিমলা অধিকারীকে ঘর থেকে নামিয়ে দেয় মনিকা। তারা রান্নাঘরে রান্না করতে গেলে মনিকা তাদের গালিগালাজ করে মারধর করে। বিষয়টি তাদের ছেলে খোকন জানলেও সে তার স্ত্রী মনিকার ওপর কোনও কথা বলতে পারেন না।