রাজশাহীর বাঘা উপজেলার রুস্তমপুর ভারতীপাড়ায় ছাগল নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে ১০টি পরিবার ১০ দিন থেকে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় ও সমাজের বিভিন্নস্থানে অভিযোগ করেও এর প্রতিকার পায়নি এ ১০টি পরিবার। ফলে পরিবারগুলো বিকল্প পথ দিয়ে কষ্ট করে যাতাযাত করতে হচ্ছে।
জানা যায়, বাঘা উপজেলার রুস্তপুর ভারতীপাড়া গ্রামের রানা মন্ডলের দুটি ছাগলের বাচ্চা যায় জিয়াউর রহমানের বাড়িতে। এ ছাগগের বাচ্চা যাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে জিয়াউর রহমানের মা সারভানু বেওয়াকে ব্যাট দিয়ে রানা মারপিট করলে আহত হয়। তারপর রানার নিজ জমির উপর ঘর তুলে যাতাযাতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে জিয়াউর রহমানের বোন খুশি আক্তার রিয়া রাস্তা বন্ধ করতে নিষেধ করতে গেলে তাকেও মারপিট করে রানা। ঘটনাটি ঘটেছে ১১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। ফলে বর্তমানে ১০টি পরিবার ১০ দিন থেকে বর্তমানে রাস্তা বন্দী হয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় জিয়াউর রহমান বাদি হয়ে রানা মন্ডলের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর থেকে জিয়াউর রহমানকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে সোমবার (২১ অক্টোবর) জানান।
এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি জয়নাল হোসেন বলেন, রাস্তা বন্দ করার বিষয়ে আমার কাছে জিয়াউর এসেছিল। আমি রানাকে ঘর সরে নেয়ার জন্য বলেছি। তারপরও ঘর সরিয়ে নেয়নি। বর্তমানে রাস্তার উপর ঘর তুলার কারণে ১০টি পরিবার ১০ দিন থেকে বন্ধী হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে রাস্তা বন্দী জিয়া, শাহীন, আনছার, সাজদার, হিরোন, সাজাহান, সানু বেগম, ইনতাজ, আদম বলেন, সামান্য একটি ছাগলের বাচ্চা যাওয়াকে কেন্দ্র করে আমাদের ১০টি পরিবারের যাতাযাতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বিকল্প অনেক পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।
রাস্তাবন্দকারী রানা মন্ডল বলেন, আমার জমির উপর দিয়ে আমি কাউকে চলাচল করতে দিব না। আমি আমার জমির উপর ঘর তুলেছি। ফলে কার রাস্তা বন্দ হলো, আর কার যাওয়া হলো না, এটা আমার দেখার বিষয় না।
জিয়াউর রহমান বলেন, আমি অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। ছোট বেলায় আমার বাবা মারা গেছে। নানার জমির অংশীদার হিসেবে এ জমির উপর বাড়ি করেছি। আমি হোটেলের একজন কর্মচারী। দিন আনি দিন খায়। আমার আয়ের উপর ৬ সদস্যের সংসার চলে। অন্য জায়গায় বাড়ি করার সামর্থ নেই। এ বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোন রাস্তাও নেই। রানার জমির উপর দিয়ে চলাচল করি। কিন্তু সামান্য একটি ছাগলের বাচ্চাকে কেন্দ্র করে আমিসহ ১০টি পরিবারের রাস্তা বন্দ করে দিয়েছে। ফলে আমরা এখন নিরুপায় হয়ে পড়েছি।
আড়ানী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিটন হোসেন বলেন, অভিযোগ করার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমাকে সমঝোতা করার দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সময় করতে না পেরে এ বিষয়টি নিয়ে বসা হয়নি।
আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী বলেন, এ বিষয়টি শুনেছি। পৌরসভার পক্ষ থেকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।
বাঘা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য এক অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।