নওগাঁর মান্দায় যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় কালীসফা আদিবাসী পল্লীতে হামলাসহ মারপিটের ঘটনায় ৭জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শ্লীলতাহানীর শিকার কিশোরীর বাবা বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মান্দা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলায় আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার তাদের নওগাঁ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালীসফা মোল্লাপাড়া গ্রামের সাইফুদ্দীনের ছেলে হাবিবুর রহমান (১৯), আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে ইউসুফ আলী (১৭), রকিব হোসেনের ছেলে সুজন ইসলাম (১৭) ও দেলুয়াবাড়ি মোল্লাপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে জিহাদ হোসেন (১৭)। তবে এখন পর্যন্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন ঘটনার মূলহোতা নাজমুল হক ও বেনজির আহমেদ বাবু।
পল্লীর মোড়ল উজ্জ্বল সরদার জানান, ‘ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও মুলহোতা নাজমুল ও বাবুকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এনিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পল্লীর নারী-পুরুষদের নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। মুল আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় পল্লীর নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চরম আতঙ্কে আছি। অবিলম্বে নাজমুল ও বাবুসহ জড়িত সকল বখাটেদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।
ঘটনার শিকার কিশোরীর ভাই সাগর ওরাও অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনার পর মোবাইলফোনে বাবু আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। এখন মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে দুইবোনসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমাদের দিন কাটছে।’
মান্দা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, কালীসফা আদিবাসী পল্লীর এক কিশোরীর শ্লীলতাহানীর ঘটনার তার বাবা বাদি হয়ে মান্দা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে নওগাঁ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীসফা দীঘিপাড়া মোড়ের একটি মন্দিরে ‘ডালপূজা’ দেখে বুধবার সন্ধ্যায় বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফিরছিলেন ওই পল্লীর ৩ কিশোরী। পথিমধ্যে দেলুয়াবাড়ি এলাকার মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হক এক কিশোরী ঝাপটে ধরে শ্লীলতাহানী ঘটায়। জের ধরে বৃহস্পতিবার বেলা ১০টার দিকে বেনজির আহমেদ বাবুর নেতৃত্বে একদল বখাটে যুবক ওই পল্লীতে হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এতে ওই পল্লীর ৪ নারীসহ ৭জন আহত হন।