‘দেশের উন্নয়নের স্বার্থে অনিয়ম বা দূর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করা প্রয়োজন। আর এই মহান কাজটা সাংবাদিক ছাড়া সহসায় সম্ভব নয়। তবে সাধারণত সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাংবাদিক পরিচয় পেলে তথ্যপ্রদান না করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে থাকেন। এর কারণ হিসাবে অনেকাংশেই দায়ী সাংবাদিকরা। কিন্তু প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তাগণ তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণত এমনটি করেন না। কারণ দেশের উন্নয়নের সার্থে আমরাও চাই অসাধূদের মুখোশ উম্মোচন হোক। তবেই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারবে সরকার। এমনটি হলে সোনার বাংলা গড়তে প্রকৃত পক্ষেই বেশি সময় লাগবে না।’ বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা: ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ, নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও দায়মুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হামিদুল হক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় নিউজ নেটওয়ার্ক-এর ব্যবস্থাপনায় রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ৫দিন ব্যাপী এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
ডিসি বলেন, ‘সাংবাদিকদের তথ্য প্রদানে অনিহার বিষয়টি নিয়ে যেটা জেনেছি, তাতে পাওয়া গেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছ থেকে পাওয়া বক্তব্যটি সম্পূর্ন প্রকাশ না করে তথ্যটি নীতিবাচকভাবে প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। আবার সোর্সের পরিচয়ও প্রকাশ করে দেয়া হয়। ফলে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে অনিয়ম বন্ধের ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই তথ্য দেননা। তবে এমন ঘটনা সাধারণত অনভিজ্ঞ সাংবাদিকরাই ঘটিয়ে থাকেন। যে কারণে সম্পূর্ন প্রশিক্ষণ না নিয়ে এমন মহান পেশায় আসা বা তাদের চাকরি দেওয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরও উচিত নয়।’
দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মোহাম্মদ আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রশিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল ও নিউজ নেটওয়ার্ক-এর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট রেজাউল করিম। সার্বিক তত্বাবধায়নে ছিলেন নিউজ নেটওয়ার্কের কর্মকর্তা শ্যামল কান্তি সিংহ রায়।
পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা কিভাবে ঝুঁকি এড়িয়ে চলবে, তদন্ত ও ক্রিমিনাল প্রতিবেদনগুলো করার সময় কি ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে, প্রতিবেদন তৈরী করার সময় কি কি বিষয় লক্ষ রাখতে হবে এমন আরো দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়াও ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার প্রয়োজনীয়তা ও করণীয় ছাড়াও নারী সাংবাদিকদের ঝুঁকি এড়াতে করণীয় বিষয়সমুহ তুলে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থেকে একই স্থানে ৫দিনব্যাপী ২য় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে। এতেও ২৫ জন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করছেন।