‘মহালয়া থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত পূজার সার্বিক নিরাপত্তায় সারাদেশের ন্যয় অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ বাহিনী। পাশাপাশি পূজার চার দিন থাকবেন আনসার সদস্যরাও। আর গোয়েন্দা বাহিনীর তথ্যানুযায়ী সনাতন ধর্মালম্বীদের এই দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে কোনো হুমকির শঙ্কা পাওয়া যায়নি। তারপরেও পূজা চলাকালীন সময় নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে অতিবাহিতের লক্ষ্যে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের সদস্যদেরও সজাগ দৃষ্টি থাকবে। ফলে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ঘটানোর সুযোগ নেই।’
পূজা চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তার বিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় একান্ত সাক্ষাতকারে এই প্রতিবেদককে এমনটিই জানিয়েছেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) একেএম হাফিজ আক্তার। তারপরেও পূজা চলাকালীন সময়ে যে কোনো অনিয়ম চোখে পড়লে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরার আগে, স্থানীয় পুলিশ বা পূজা উৎযাপন কমিটি অথবা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
একই সাথে কাউকেই কোন প্রকার গুজবে কান না দেয়ারও আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, গুজবের সাথে তাল মিলিয়ে কেউ যে কোন মাধ্যমে বিশৃঙ্খলার নূন্যতম চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবেনা। আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারিদের পক্ষে কোন প্রভাবশালী ইন্ধনদাতা হলেও আইনপ্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ জিরোট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করেই তাদের দায়িত্ব পালন করবে। এই নির্দেশনা শুধু এই পূজা উপলক্ষ্যেই নয়, মাদক ও জঙ্গীবাদসহ সকল সন্ত্রাসীমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনা রয়েছে। ফলে এগুলো কর্মকান্ডের সাথে যে ব্যক্তিই জড়িত থাকুক না কেন, পার পেয়ে যাওয়ার সুজোগ নাই।
ডিআইজি বলেন, আমার কাছে আসা তথ্যানুযায়ী কাল (শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে আগামি মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এবার ৩ হাজার ২৮২টি ম-পে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। আর প্রত্যেকটি পূজা ম-প ঘিরে রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী রাজশাহী জেলায় এবার পূজা ম-পের সংখ্যা ১৭২টি। এ ছাড়া নওগাঁয় ৭৮৬টি, চাঁপাইনবানগঞ্জে ১৩৯টি, নাটোরে ৩৭৭টি, পাবনায় ৩৫১টি, সিরাজগঞ্জে ৪৯৪টি, বগুড়ায় ৬৭১টি ও জয়পুরহাটে ২৯২টি ম-পে পূজা অনুষ্ঠিতের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আয়োজকরা ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
রাজশাহী পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা আরো বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব শেষ করতে গত সোমবার সন্ধ্যায় তার কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ও পূজা উৎযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজ নিজ এলাকার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। তাতে কোন প্রকার শঙ্কার বিষয় কেউ উপস্থাপন করেন নি। তারপরেও শান্তিপূর্নভাবে এই উৎসব অতিবাহিতের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার এসপি ও পূজা উৎযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।