সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে
অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর মহানগর নেতৃবৃন্দ।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা বেলা ১টা পর্যন্ত রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে ভোটগ্রহণ পেছানোর দাবি জানান পূজা উদযাপন পরিষদ।
শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালীন রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভোট প্রদানে বিঘœ ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা করছে পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে পরিষদের রংপুর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ধনজিত ঘোষ বলেন, ‘আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। পরের দিন পূজার সপ্তমী। ওই দিন উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হলে রংপুর সদর ও মহানগরীর হিন্দু সম্প্রদায়ের ৭০ হাজার ভোটারের ভোট প্রদানে বিঘœ ঘটবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন (৫ অক্টোবর) হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণ পূজা ম-পে অঞ্জলি প্রদান করবেন। ওই দিন ভোট হলে যানবাহন বন্ধ থাকবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সবাই পূজা অর্চনা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। এ ছাড়া রংপুরের অনেক স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা ম-প থাকে। যদি ভোটের দিন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে এর প্রভাব কী হবে, তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দুর্গোৎসবের কারণে যাতে ভোট প্রদানে বিঘœ না ঘটে এমন তারিখ নির্ধারণ করা হোক। এতে সবাই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে।’
পরিষদের সভাপতি সুব্রত কুমার মুকুল জানান, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। রাষ্ট্রের সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের নৈতিক অধিকার আছে। অথচ নির্বাচন কমিশন ও সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেই। যদি ভোটগ্রহণের তারিখ পরিবর্তন করা না হয় আমরা রংপুর জেলা ও মহানগরের ৯ শত ৬২ মন্ডপে দূর্গা পূজা বর্জন করব।
অনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মন্ডল, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রশীদ বাবু, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ রংপুর জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি সুশান্ত ভৌমিক সুবল, রংপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য দেবদাস ঘোষ দেব প্রমুখ।
এদিকে, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন প্রসঙ্গে রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জি.এম. সাহাতাব উদ্দিন বলেন, 'ভোটগ্রহণ পেছানোর বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।'
এদিকে প্রার্থীদের মধ্য থেকে এখনো কেউই হিন্দুধর্মীয় নেতাদের এই দাবির প্রতি সহমত পোষণ করেন নি। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামি ৫ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
রংপুর সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নিয়ে গঠিত এ আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন এবং ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন নারী ভোটার।