মেয়ে হিন্দু ঘরের। ছেলে মুসলমানের। সংসার পেতেছেন কোরবানি ঈদের আগে। তাদের বিয়ের বৈধতা ও সংসার নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কারণ কেউই ধর্মান্তরিত হননি। ঘটনাটি পাবনার চাটমোহরের মল্লিকপুর গ্রামের।
এলাকাবাসী সুত্রে খবর,মেয়েটিকে কোরবানি ঈদের আগে ঘরে তুলেছেন গ্রামটির বাসিন্দা মাসুদ সরদার। কিন্তু তাদের বিয়ে আইনসিদ্ধ কিনা,তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে কানাঘুষা। মেয়েটির ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টিই কানাঘুষার কারণ। মাসুদ একজন কৃষক। মাসুদের সাথে বিয়ের আগে ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন মেয়েটি। মেয়েটির বাড়ি নওগাঁ জেলায়।
মাসুদ সরদারের বললেন,‘মুসলমান শরিয়ত মেনে বিয়ে ও সংসার করছেন তারা। বিয়ে পড়িয়েছেন স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার ও রামচন্দ্রপুর সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মওলানা আবদুস সালাম। বিয়ের কাবিননামাও নিবন্ধন করেছেন তিনি। স্বজনসহ স্থানীয় ৩০জন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।এজন্য কাজীকে মোটা টাকা দিতে হয়েছে,কিন্তু এখন কাবিননামা দিচ্ছেন না।’
মেয়েটির ভাষ্য,তিনি মুসলমান হয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করেছেন। ১০ বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। এর আগে দুইবার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সংসার টেকেনি। ধর্মান্তরিত হওয়ার কাগজ আছে সাবেক প্রথম স্বামীর কাছে। বিয়ের কাবিননামা ও ধর্মান্তরিত হওয়ার কোন ধরণের প্রমাণাদি দেখাতে পারেননি তারা।
কাজী মওলানা আ. ছালাম দাবি করেছেন,তিনি এ বিয়ের রেজিষ্ট্রেরি করেননি। ওরা (মাসুদ ও মেয়েটি) তার কাছে এসেছিল,এটা সত্য। ওদের নাকি তিনি বের করে দিয়েছেন।
আঃ ছালঅম জানান,মেয়েটির কাছে ধর্মান্তরিত হওয়ার কাগজপাতি ছিল না। ওরা আমাকে নানাভাবে চাপ দিয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছি, ধর্মান্তরিত হওয়ার কাগজ থাকলেই কেবল আমি এ বিয়ে পড়াবো। তারা কোথায়-কিভাবে বিয়ে করেছেন, এটা আমি জানি না।’
বিয়ের আসরে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,আঃ ছালাম হুজুরই বিয়ে পড়িয়েছেন এবং কাবিন করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নিকাহ রেজিষ্ট্রার জানিয়েছেন, বৈধ ধর্মান্তরিত হওয়ার সনদ ছাড়া এ ধরণের বিয়ে পড়ানো দন্ডনীয় অপরাধ। বিয়ে পড়ালে সংশ্লিষ্ট কাজীর লাইসেন্স বাতিল হবে। জেল-জরিমানাও হবে। তবে ছেলে ও মেয়ে পক্ষ যদি তথ্য গোপন করেন, সেটা আলাদা কথা।
পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বর খায়রুল ইসলাম জানালেন,ঘটনাটি আমি ঈদের আগে শুনেছিলাম। এখানে আমি কি করবো? ওরা প্রাপ্ত বয়স্ক। বিয়ে কিভাবে হলো, আমি ওসব কিছুই জানিনা। পার্শডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী বলেন, ঘটনাটি আমি জানি না।