বিরলে সুখের নীড় গড়ার স্বপ্নে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ী থেকে পালিয়ে বিয়ে করেও সুখের নীড় বাঁধার স্বপ্ন পুরণ হলো না সুমী আক্তারের। যৌতুক লোভী পাষন্ড স্বামী মাহফুজুর রহমানের হাতে যৌতুকের বলি হলো স্ত্রী সুমী আক্তার।
গত মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকা’র আশুলিয়া থানার কুটুরিয়া দেওয়ানবাড়ীর ৫ম তলা ভাড়াবাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ পাষন্ড স্বামী মাহফুজুর রহমানকে গ্রেফতারও করেছে।
নিহতের ভাই সাদ্দাম জানান, মঙ্গলবার সাভার এনাম মেডিকেলে সুমী মারা যাওয়ার সংবাদ মুঠোফোনে পান তিনি। সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে ছুটে যান এনাম মেডিকেলে গিয়ে তিনি জানতে পারেন মাহফুজুর রহমানের অমানবিক নির্যাতনের শিকার সুমী আক্তার প্রথমে গুরুত্বর আহত হোন। তড়িঘড়ি করে সাভার এনাম মেডিকেল হাসপাতালে মুমুর্ষ অবস্থায় গুরুত্বর আহত সুমী আক্তারকে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুমীর ভাই সংবাদ পেয়ে মেডিকেলে গিয়ে সুমীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে সন্দেহ হলে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করে নিহত সুমীর বড়ভাই আসমাউল হোসেন ওরফে সাদ্দাম।
সুমীর স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে সুমীকে হত্যা করা হয়েছে। বিয়ের পর থেকে যৌতুক না পেয়ে সুমীর বাবা-মা, ভাই-বোনসহ আত্মীয়স্বজনদের সাথে কোন ভাবেই দেখা বা কথা বলতে দেওয়া হয় নাই। তারপরেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সুমী ও তাঁর পরিবার। কিন্তু যৌতুক লোভী মাহফুজুর রহমান ৫ লাখ টাকার এক টাকাও কম নিবে না সাফ জানিয়ে দিয়ে সুমীর উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। মাসতুরা (২০ মাস) বয়সী নামের এক কন্যা শিশুর মা ছিল সুমী আক্তার।
পুলিশ অভিযোগ পেয়ে মেডিকেল থেকে নিহত সুমীর সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মরদেহ উদ্ধার করে মঙ্গলবার শহীদ সরোওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। এ সময় পুলিশ নিহত সুমীর স্বামী মাহফুজার রহমানকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
বিরলের গ্রামের বাড়ী শহরগ্রাম ইউপি’র নরসিংপাড়ায় বুধবার বেলা ১১ টার দিকে নিহতের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পাদন করা হয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, প্রায় ৩ বছর আগে বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ ইউপি’র নলদীঘি গ্রামের সহিদুল ইসলামের পুত্র মাহফুজুর রহমান প্রেম করে একই উপজেলার শহরগ্রাম ইউপি’র নরসিংপাড়ার মোতাহার হোসেনের মেয়ে সুমী আক্তারকে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। নিহতের স্বজনরাসহ এলাকাবাসী সুষ্ঠ্য তদন্ত সাপেক্ষে এ হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আসমাউল হোসেন ওরফে সাদ্দাম বাদি ঢাকার আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।