একেবারে গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে শিক্ষার আলো এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তেমন না জাগলেও বর্তমানে স্কুলটির সৌন্দর্য্যে ও মাধুর্য্য মন্ডিত পরিবেশ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য বিদ্যালয় মুখিতায় প্রায় সকলেই মুগ্ন। এমন পরিবেশ ইতি পূর্বে আর কখনই উপজেলার কোন বিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ চোখে না দেখলে বিস্বাস হবে না। স্কুলটির অবস্থান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের কুতুবাকুড়া গ্রামে। আর এসব কিছু হওয়ার পেছনে ছিলেন একজন ব্যাক্তি যিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য দিয়ে গেছেন নিজের জমি ও পেনশনের টাকা।
বিদ্যালয় সূত্রে, সরকারের স্কুল উন্নয়ন বাজেট আর প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকের পরিবারের দেওয়া স্কুলের নানাবিদ উন্নয়নে বিদ্যালয়টি এলাকাসহ বহু জায়গায় অনুকরনীয় ও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। মহান মুক্তিযোদ্ধের নানা স্মৃতি বিজরিত ঘটনা স্ববলিত ডিজাইনে বিদ্যালয়টিকে সাজিয়েছেন মনের মতো করে। দারুন ভৌত অবকাঠামো, সজ্জিতকরন ক্লাস রোম, গ্রামের চারিদিক থেকে প্রাকৃতিক বাতাস, সুপ্রস্থ মাঠ, ইলেকট্রিক ফ্যান সমৃদ্ধ ক্লাস রুম আর পরিস্কার পরিচ্ছনতার ফলে বিদ্যালয় মুখি হচ্ছে গ্রামের শিশু শিক্ষার্থীরা। নব জাতীয় করন বিদ্যালয়টি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের পিতা হাজী আলী আহম্মদ আলী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মাদরাসা, কবরস্থান, মসজিদ ও ইদগাহ মাঠ নির্মানের জন্য প্রায় ৫ একর জায়গা দান করেন। আর পিতা চাকুরীজীবি হওয়ার কারণে পিতার পেনশনের টাকা এই মসজিদের জন্য দান করে গেছেন। শিক্ষানুরাগী মহৎ এই ব্যাক্তিটির জন্যই আজ এসব কিছু সুপ্রতিষ্ঠিত ও এলাকায় দৃষ্টান্তে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে ৫ জন শিক্ষক নিয়ে একটানা সকাল হতে বিকেল পর্যন্ত বিরতীহীন ক্লাশের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান কার্যক্রম চলছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সার্বিক তত্বাবধানে নব জাতীয়করন প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে বরাদ্ধকৃত অর্থে মাইনর মেরামত কার্য সম্পাদনের অংশ হিসাবে সম্প্রতি বিদ্যায়লটিতে অভুতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। রয়েছে মাল্টি মিডিয়া ক্লাস রোম। নন্দিত করে সাজানো হয়েছে বিদ্যালয়ে মহান মুক্তিযোদ্ধা কর্নার, সরকার কর্তৃক ন্যানো প্লাষ্টিক বোর্ড দ্বারা নির্মিত বেঞ্চ, টেবিল। সদ্য নির্মিত হওয়ার পথে দুতালা ওয়াস ব্লক, লুকেটর বোর্ড স্থাপন, চারিদিকে ওয়েদার কোর্ট দেওয়াল রং, বিশিুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, সিকিউরিটি ওয়াল রং করা, গ্যালকো রঙ্গিন টিন দ্বারা পুরাতন দুচালা পুরোটাই হাফ বিল্ডিং সজ্জিত করন, বিদ্যালয়ে আসার জন্য মুল সড়ক থেকে সাড়ে ৮ শ মিটার অর্থ্যাৎ প্রায় ১কিঃ মিঃ ৮ফুট পাকা পিচ করা রাস্তা তাদের সহযোগিতায় এলজিইডি সদ্য নির্মান কাজ সমাপ্ত করেছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে মাটিও ভরাটের কাজও চলছে।
এব্যাপারে কুতুবাকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, শিশুদের জন্য আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে সারা দেশে যেভাবে পড়াশুনা হয় সেভাবেই বিদ্যালয়কে সাজানো হয়েছে। আমরা সেই ভাবেই গ্রামেও এটি করার আশা করছি। সেই কথা ভেবেই শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় একটি নান্দনিক ক্লাস স্কুল তৈরি করতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে এতে করে সজ্জিত করন রোমে শিক্ষার্থীদের ক্লাশে পড়াশুনা করতে এবং এখন দীর্ঘক্ষন থেকে ক্লাস করতে এখন আর কোন অসুবিধা হয় না। সরকারের ব্যাপক ভিত্তিক এই উন্নয়ন কাজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জন্যই শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে শিক্ষার মান। আসলে আমরা পৃথিবীতে কেউ থাকবো না। এই জমিজমা টাকা পয়সা দিয়ে কি হবে। থাকবে শুধু আপনার দেওয়া কিছু স্মৃতি যা মানুষ চিরকাল দেখবে। এটি দেখে হয়তো মানুষ আমাদের সর্ম্পকে কিছু জানতে পারবে। এইতো আমাদের লক্ষ্য। তাই আমাদের আরো কিছু জমি রয়েছে। যা আগামীতে একটি বিএম কলেজ স্থাপন করা আশা রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও শিক্ষক হাজী মোঃ শওকত আলী বলেন, এইসব যা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই সবই তাদের পরিবারের দেওয়া। যার কারণে এলাকাবাসী উপকৃত হচ্ছে। এরা সবাই শিক্ষানুরাগী ও দানশীল ব্যাক্তি। যে কারণে এরা অনেক কিছুই নিজের টাকায় করার কারণে এসব অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সরকারের দেওয়া অর্থে বিদ্যালয়ে নানা উন্নয়ন করার পরও অত্র ব্যিদালয়ে প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম নিজে ব্যাক্তি উদ্যোগে অনেককিছু করেছেন।