যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা ইউনাইটেড স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অশোক কুমার সুরের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত কার্যক্রম অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য মঙ্গলবার বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ কলেজে যান।
স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক সাধন ঘোষ জানান, গত ২৭ আগস্ট সকালে স্কুল শাখার বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অশোক কুমার সুর তার কোচিং সেন্টারে কইখালি গ্রামের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ইভটিজিং করেন। এ সময় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা দেখে ফেললে বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আফরোজা আক্তার বুলবুলের নেতৃত্বে তিনজন শিক্ষক ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান এবং ওই ছাত্রীর কাছ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত শোনেন। এরপর ওইদিন রাতে স্থানীয়রা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সব দেয়ালে শিক্ষক অশোক কুমারের শাস্তির দাবিতে দেয়ালিকা এবং পোস্টার সাটিয়ে দেয়। পরদিন ২৮ আগস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকদের নিয়ে অধ্যক্ষ আওয়াল হোসেন জরুরী আলোচনায় বসেন। এ সময় সর্বসম্মতিক্রমে দরাজহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবলুর রহমান, সহকারি অধ্যাপক ফয়সাল রশিদ ও গোপাল চন্দ্র অধিকারীকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে শিক্ষক অশোক কুমার সুরের শাস্তির দাবিতে দেয়ালিকা ও পোস্টার সাটানোর সংবাদ পেয়ে তিনি স্কুল এ- কলেজে না এসে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে ৪ দিনের ছুটির দরখাস্ত পাঠিয়েছেন। এদিকে তদন্ত কমিটির কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শনের জন্য মঙ্গলবার কলেজে যান বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ। এ সময় তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষ আওয়াল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত কমিটির কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ কলেজে আসেন। তিনি তদন্ত কমিটির কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য দরাজহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবলুর রহমান জানান, তদন্ত কমিটিকে ১০দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাড়াতাড়ি রিপোর্ট জমা দেয়া সম্ভব হবে। শিক্ষক অশোক কুমার ছুটির দরখাস্ত পাঠিয়েছেন বলে অধ্যক্ষ আওয়াল হোসেন ও তদন্ত কমিটির সদস্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে শিক্ষক অশোক কুমার সুরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, স্কুল পর্যায়ের বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অশোক কুমার সুর ইতোপূর্বে ছাত্রী শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছেন।