নওগাঁর পত্নীতলায় নতুন আউস ধান ঘরে তোলার আনন্দে যখন কৃষক-কৃষাণীর দুচোখে আনন্দে ভরপুর থাকার কথা সে সময়ে চরম বিষন্নতা আর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে কৃষক ও চাষীদের ঘরে ঘরে। বাজারে ধানের দাম না থাকায় তাঁরা চোখে যেন সর্ষে ফুল দেখছেন। আগামি দিনগুলি কিভাবে পাড়ি দিয়ে তাঁরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবেন সে চিন্তাই এখন কৃষকের মনে।
সরেজমিনে পতœীতলা উপজেলার বরহট্রি, শ্রীপুর, বিন্নানপুর, গগনপুর, চন্ডিপুর, কমলাবাড়ী, গোষনগর ফসলের মাঠ ঘুরে গেছে, কৃষক-কৃষাণী মাঠে ধান কাটছে। কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, ধান রোপনের পর থেকে মাড়াই দেয়া পর্যন্ত প্রতিমণ ধান উৎপাদনের ব্যয় হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা। আর এক বিঘায় ফলন হচ্ছে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৮ মণ। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে গড়ে ৩০০ টাকা দরে। ধানের উৎপাদন ব্যায়ের চেয়ে অনেক কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি মণে তাঁদের ১৫০ থেকে ২০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। যে সকল কৃষক জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছেন তাদের জমির মালিককে দিতে হতে বিঘাপ্রতি ৬মণ ধান। যা তাদের পরিবারকে ফেলে দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে।
গগনপুর গ্রামের কৃষক হাসান আলী, শ্রীপুর গ্রামের আসাদ, আবদুল মতিন, আব্দস সামাদ, নেপালপুর গ্রামের হান্নান বলেন, আউসের চাষ করে উৎপাদন খরচ তো পাচ্ছি না। সার,বীজ, সেচ, ওষুধ আর শ্রমিকের খরচদিয়ে যে দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে সেখানে গড়ে মণপ্রতি ২০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। সরকার বাজার মনিটরিং না করায় ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কম দামে বাজার থেকে ধান কিনছেন। এই অবস্থায় তিনি কি করবেন সে নিয়ে চরম সংশয় প্রকাশ করেন। আগামীতে তিনি ধান চাষ আর করবেন কিনা সে নিয়েও সংশয়ের কথা জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র এর সাথে যোগাযোগ করা হলে বর্তমানে বাজারে ধানের দামে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, এতে কৃষকরা ধান উৎপাদনে আগ্রহ হারাবে। এ বছর পতœীতলা উপজেলায় ৭হাজার হেক্টর জমিতে আউস ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ আউস ধান কাঁটা সম্পন্ন হয়েছে।