সৈয়দপুরে রেলভূমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ নয় বরাদ্দ-বন্দোবস্ত চাই এ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠন ‘অধিকার’। গত ৪ সেপ্টেম্বর সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশ ক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় রেলভূমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ না করে বসবাসরত রেলভূমি বরাদ্দ দেয়ার দাবী জানিয়ে বক্তব্য দেন, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও অধিকার সংগঠনের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মো. তাসলিম, সৈয়দপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু, উর্দূভাষী জনগোষ্ঠির পক্ষে আদালতে রিটকারী ও বিএনপি নেতা আশরাফুল হক বাবু প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে অধিকার সভাপতি মোখছেদুল মোমিন বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারতের উড়িষ্যা, বিহার ও পশ্চিম বঙ্গের প্রচুর সংখ্যক বিহারী ও বাঙ্গালী সৈয়দপুরে এসে রেলওয়ে কারখানায় কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। পাশাপাশি ঘরবাড়ী স্থাপন করেন বসবাসের জন্য। একই সাথে রেলওয়ের জমিতে গড়ে তোলা হয় ৩০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান ৩৫টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ ভবন, গোলাহাট কবরস্থান ও ২২টি বিহারী ক্যাম্প। দীর্ঘ ৭২ বছর রেলওয়ের এসব জমিতে তারা বসবাস করে আসলেও আগামি ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর রেল বিভাগ সৈয়দপুর শহরের রেলভূমিতে অবস্থিত ওইসব স্থাপনা উচ্ছেদ করার ঘোষণা দেয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শহরের মানুষ। আর এটি বাস্তবায়ন করা হলে শহরের প্রায় ২০ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়বে বলে উল্লেখ করেন। বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের নীতিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, রেলওয়ে ভূমি ৩ শ্রেণিতে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। প্রথমত হলো- বর্তমান রেলওয়ের প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত- ভবিষ্যতে রেলওয়ের প্রয়োজন ও তৃতীয়ত হলো- যে জমি রেলওয়ের প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি ওই নীতিমালায় বাণিজ্যিক, কৃষি, মৎস্য, নার্সারী ও রিফুয়েলিং স্টেশনসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে টোকেন ফি নির্ধারণের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে নীতিমালায় আবাসিক কাজে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেয়ার কথা উল্লেখ না থাকায় উচ্ছেদ নোটিশ পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে শহরবাসী। তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ানমার থেকে আগত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবতার অনন্য নেতা হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। একইভাবে সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ না করে তাদের বসবাসরত ভূমি স্বল্প মূল্যে বরাদ্দ-বন্দোবস্ত করার ব্যবস্থা করলে এটিও বিরল হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ নিয়ে কথা হয় রেলওয়ের বিভাগীয় স্টেট কর্মকর্তা নুরুজ্জামানের সাথে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে যেসব জমি প্রয়োজন শুধু সেগুলির উপরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এ সময় নেতৃবৃন্দ জানান যে, গত এপ্রিল মাসে ‘অধিকার’ গঠন করার পর থেকে ইতোমধ্যে আলোচনা সভা অব্যাহত রেখেছে। সাংসদ রাবেয়া আলীম, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রেলওয়ে সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংস্কৃতিক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান এমপি এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্বারকলিপি দেয়া হয়েছে।