রাজশাহীর তানোর গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গা জবর দখল করে অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মান করে বেচা-কেনা করায় ওই ঘরটিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গত রোববার দুপুরে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দোকানঘরটিতে তালা ঝুলিয়ে দেন। এলাকাবাসীসহ গোল্লাপাড়া বাজারের ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তানোর গোল্লাপাড়া গ্রামের জৈনক ব্যাক্তির পুত্র তপন কুমার গত ১ বছর আগে তানোর গোল্লাপাড়া হাটের মুচি পট্টির হাটের সরকারী জায়গা জবর দখল করে চায়ের দোকান করে আসছিলেন। গত শুক্রবার ওই দোকানঘরটি গোল্লাপাড়া বাজারের মেসার্স নাহিদা ফার্মেসীর মালিক মাদারীপুর সরকারী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সরকারী চিকিৎসক ফরমান আলীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে স্ট্যাম্পে ঘরের পজিশন বিক্রি করেন। গত রোববার সকালে ফরমান আলী তার লোকজন দিয়ে ওই চায়ের দোকানের মালামাল তুলে নাহিদা ফার্মেসীর সাইনবোর্ড দোকানের উপরে সাটিয়ে ভেতরে ঔষুধ রাখার গ্যালারিসহ ডেকোরেশনের কাজ শুরু করেন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দোকানঘর বেচা-কেনার বিষয়টি প্রকাশ পায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানালে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু ওইদিন রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারী জায়গায় অবৈধভাবে তৈরি দোকানঘরটি কেনা-বেচার সত্যতা পেয়ে দোকান ঘরে তালা মেরে দেন এবং সরকারী জায়গা অবৈধভাবে কেনা-বেচা ব্যাপারে সকলকে সতর্ক করে দেন। নাম প্রকাশ না করার সর্তে হাটের ব্যাবসায়ীরা বলেন প্রায় ৫ লাখ টাকায় বিক্রি হলেও চা দোকানী তপন ৪ লাখের মত নিতে পেরেছেন। বাকি টাকা গেছে বাজারের কিছু ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীদের পকেটে। ব্যাবসায়ীরা আরো বলেন, শুধু এই ঘরটি না হাটের সরকারী জায়গাগুলো স্থানীয় হোমড়া চুমড়ারা যে জারমত করে বাজারের রক্ষকদের ম্যানেজ করে এমন অনেক পজিশন অবৈধভাবে দখল ও দোকানঘর করে কেউ বিক্রি করছেন কেউ ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তানোর গোল্লাপাড়া হাটে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রভাবশালীরা যে জারমত করে হাটের সরকারী ফাঁকা জায়গাসহ ফ্লাট ফর্ম এমনকি সরকারী ভাবে নির্মিত হাটের সেট গুলো জবর দখল করে অবৈধভাবে দোকানঘর তৈরি করে কেউ ব্যাবসা করছেন কেউ লাখ লাখ টাকা সিকুরিটি নিয়ে হাজার হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। জবর দখলের প্রতিযোগীতায় গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী প্রায় সব জায়গাই যে জারমত করে দখল করে ফেলেছেন। যেন দেখার কেউ নেই। এভাবে গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গা দখল নিয়ে যে কোন সময় বড় ধরনের সংর্ঘষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গা দখল করে দোকান ঘর তৈরির তালিকায় রয়েছেন সাংবাদিক, গ্রাম্য ডাক্তারসহ ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা-কর্মিসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত প্রভাবশালীরা। তানোর গোল্লাপাড়া হাটের সরকারী জায়গা জবর দখল করে অবৈধভাবে তৈরি করা দোকান ঘর গুলো উচ্ছেদ করে গোল্লাপাড়া হাটের ঐতিয্য ফিরিয়ে আনার জন্য উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি ও জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ব্যাবসায়ীসহ স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তানোর গোল্লাপাড়া বাজার বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, হাটের সরকারী ফাকা জায়গা গুলো যে যার মত করে জবর দখল করে দোকান ঘর নির্মান করায় বিলুপ্ত হতে বসেছে হাটের সৌন্দর্য ও ঐতিয্য। তিনি বলেন গোল্লাপাড়া হাঠের সরকারী জায়গা জবর দখল করে অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মান কারীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে, প্রশাসনের কাছে তালিকা দিয়ে ভেঙ্গে হাটের সৌন্দর্য ও ঐতিয্য ফিরিয়ে আনার ব্যাবস্থ্যা নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, সরকারী হাটের জায়গা চা দোকানী অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন যার কারণে ওই ঘরে তালা মারা হয়েছে। তবে, ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দোকানে কাউকে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, অবৈধ দখলদারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা ও অবৈধ স্থাপনা গুলো দখল মুক্ত করার ব্যাবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।