শিশু আবদুর রশীদকে কুপিয়ে চলন্ত গাড়ির নিচে ফেলে হত্যাকারি সন্ত্রাসী মোজাফফরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও সে ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বৃহস্পতিবার রাতে নগরীরর টেক্সটাইল মোড়ে শিশু আবদুর রশিদকে হত্যা করে মোজাফ্ফর ও তার বাহিনী। নগরীর খলিফাটারী এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে মোজাফফর। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পুলিশ ট্রেনিং স্কুল সড়কে এবং টেক্সটাইল মোড় এলাকায় ছিনতাই ডাকাতি করা ছিল তার পেশা। তাদের দলে ছিল ১০ তেকে ১৫ জন। গভীররাতে কিংবা ভোরবেলা নাইট কোচের যাত্রীরা ওই সড়ক দিয়ে গেলেই তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিত মোজাফ্ফর বাহিনী। তার বাবা টেক্সটাইল মোড়ে ভাংড়ির ব্যবসা করেন। সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বাস থাকেন তারা। টেক্সটাইল মোড় ও আশপাশ এলাকায় কেউ ব্যবসা করলে তার কাছ থেকে মাসি চাঁদা আদায় করতে মোজাফফর ও তার বাহিনী। আশপাশের ব্যবসায়ীরা এই বাহিজনীর কাছে জিম্মী ছিল। মোজ্জাফর বাহিনীকে চাদা না দিয়ে ওই এলাকায় কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে পারত না।
এদিকে রংপুর র্যাব-১৩ শনিবার ভোরে রংপুর নগরীর সাতগাড়া হতে রশিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আবদুল আওয়ালের পুত্র মোঃ আলামিন সরদার বাবু (২৫) গ্রেপ্তার করেন। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের তৎপর রয়েছে পুলিশ ও র্যাব।
নিহত রশীদের বাবা শহিদার রহমান ন্যায় বিচার চেয়ে বলেন, কয়েকদিন আগে সন্ত্রাসী মোজাফফর আমার বড় ছেলে অটোচালক মোহনের কাছে পাঁচশ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় তাকে মারধর করে মোজফফর। আমার সামনেই মোজাফফর ও তার বাহিনী লাঠি ও ছোরা দিয়ে ছেলে রশীদকে কোপাতে থাকে। আমার বোন নাজমা ও আমি অনেক চেষ্টা করেও ছেলেকে রক্ষা করতে পারিনি। সন্ত্রাসীরা আমাদের সামনে চলন্ত গাড়ির নিচে ফেলে নৃশংসভাবে ছেলেকে হত্যা করলো। আমি খুনিদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রশীদ জানান, সন্ত্রাসী মোজ্জাফরের কোন রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ২৯ আগস্ট রাতে রশিদকে মোজাফ্ফর নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। তার বাবা শহিদার রহমান বাদী হয়ে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
এদিকে রংপুর র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মোতাহার হোসেন জানান, নৃশংসভাবে শিশু রশিদকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষযে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি র্যাব শুরু থেকেই নিবিড়ভাবে ছায়াতদন্ত করেন এবং মামলার অন্যতম সন্দিগ্ধ অভিযুক্ত মোঃ আলামিন সরদার বাবু’কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে র্যাবের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।