ভরা বর্ষা মৌসুম তবু ও বৃষ্টির দেখা নেই অনেক দিন। মাঠ,ঘাট,টুকুর,নদীনালা,হাওড় গুলোতে বর্তমানে পানি শূন্য। কবে যে বৃষ্টির পানির দেখা পাবে তা সৃষ্টিকর্তাই জানে। তাই জনপদের কৃষকরা উপরের বৃষ্টির অপেক্ষা না করে দিনরাত গভীর নলকুপ আর স্যালো মেশিনের পানি দিয়ে চলতি মৌসুমের আখ ও ধান বাচিয়ে রাখছে। আবার খালবিলে পানি না থাকার কারণে বড় সমস্যায় পড়েছে পাট চাষিরা। ক্ষেতের পাট পচাতে। নেক চাষি স্যালো মেশিরে পানি দিয়ে খানাগর্ত ভর্তি করে পাটের জাগ দিচ্ছে।
এদিকে আগামি সেপ্টেম্বর হতে শুরু হতে যাচ্ছে ২০১৯/২০ মোবারকগঞ্জ চিনি কলের আখ রোপনের কর্মসুচি। মোচিকের এবারের আখ রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। চিনিকলের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠ পাঠ পর্যায় পর্যন্ত পর্যাপ্ত জনবল সংকট সত্বেও আখ রোপনের লক্ষমাত্রা অর্জন করতে মিল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত জোরেসোরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তে চালিয়ে যাচ্ছে ঊঠান বৈঠক এবং আখ চাষি সমাবেশ। প্রকৃতির এই পরিবর্তনের কারণে এরাকার চাষিরা আখ চাষের দিকে ঝুকে পড়ছে। সময় মত রাসায়নিক সার, ভাল জাতের বীজ আর আসন্ন মাড়াই মৌসুমে বিক্রিত আখের টাকা পরিশোধের দাবি আখ চাষিদের। এবার মোচিকের মাড়াই যোগ্য দন্ডায়মান আখ রয়েছে ৬হাজার ৫,শ হেক্টর জমিতে।
এদিকে গত ২৫ আগস্ট চিনিকলের সকল প্রকার অনিয়ম ও দূনিতি প্রতিরোধের তাগিদ দিয়েছেন চিনি শিল্প কর্পোরেশনের সংসদীয় কমিটি। সংসদ সচিবালয়ে এক সভায় এই শিল্পের ১৬ টি ইউনিটকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে এই শিল্পে কর্মরত সর্বোচ্চ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠকর্মীদের এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।কমিটির সভাপতিসাবে শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বর্তমান শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদহুমায়ুন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহম্মেদ মজুমদার বৈঠকে উপস্খিত থেকে জাতির জনক বঙ্গুবন্ধুর শাসনামলের জাতীয়করনকৃত এই চিনি শিল্প গুলো লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করতে এই নির্দেশনা দিয়েছেন। সংসদীয় কমিটির এই নির্দেশনা বাস্তবায়নেদৃড় অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেছেন মোবারকগঞ্জ চিনি কলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আনোয়ার কবির এবং মোচিকের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে সভাপতি গোলাম রসুল। সম্প্রতি এক যৌথ সভায় মিলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও ইউনিয়ন প্রতিনিধিরা মিলের সকল প্রকার অনিয়ম ও দূনিতি রোধের অঙ্গিকার করেছেন।
চিনিকলের একটি সুত্র জানায় পূর্বের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইউনিয়ন মিলের ভাংড়ি লোহা প্রতিমন ৮ টাকা ও ১৬ টাকা দরে বিক্রি করে নিজেরাই লাভবান হয়েছেন। যা এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ২৫ টাকা ও ৩৬ টাকা দরে। এর আগে শ্রমিক ইউনিয়ন ও কর্তৃপক্ষ চিনি ডিলারদের সাথে যোগসাজস্য করে কম দামে চিনি বিক্রির অজুহাতে শ্রমিক কর্মচারিদের সাথে বেতনসহ অন্যান্য ভাতা দিয়েছেন ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ কমে। প্রতি মাসে বেতন দেবার সময় ১৪ ও ১৬ শতাংশ বেতন থেকে টাকা কর্তন করা হত। এসব টাকা শ্রমিক নেতা ও কতিপয় কর্মকর্তারা ভাগাভাগি করে নিতেন। বর্তমানে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল তার পরিষদদ এই মিলের তালিকাভুক্ত ১৬ জন চিনির ডিলারদের সাথে বৈঠক করে সরকার নির্ধারিত ৫০ টাকা কেজি দরে চিনি বিক্রি করছে। এখন দরকার এলাকার কৃষকদের আখের বীজ,সার,কীটনাশকসহ বিক্রিত আখের মুল্য পরিশোধ অব্যাহত রাখা। তা হলে চিনি কলের সদর দপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আখ রোপনের লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে।